শেষদিনেও প্রায় যানবাহনশুণ্য মহাসড়ক : নগরে বেড়েছে গণপরিবহন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ৮:১৬:৩৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ২য় দফার ৪৮ ঘন্টা অবরোধের শেষ দিন সোমবারও সিলেটের মহাসড়কগুলো প্রায় যানবাহনশূণ্য ছিল। তবে শেষ দিনে নগরীতে বাড়তে থাকে গণপরিবহনের চাপ। সকালে যানবাহন তুলনামুলক কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে নগরে জনমানুষের পাশাপাশি ছিল হালকা যানজটের দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন অফিস-আদালত, ব্যাংক খোলা থাকলেও উপস্থিতি ছিল কম।এদিকে শেষ দিনের অবরোধ বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্তভাবে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা পিকেটিং ও মিছিল সমাবেশ করলেও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সোমবার সকালে অবরোধ চলাকালে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, সিলেট থেকে দুরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি। এমনকি মাঝে মাঝে আন্তঃজেলা বাস ছাড়লেও যাত্রীর চাপ না থাকায় বাস চলাচল ছিল কম।দ্বিতীয় দফা অবরোধে শেষ দিন সোমবার (৬ নভেম্বর) রোববারের ন্যায় সকাল থেকে সিলেটের সড়ক মহাসড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ছিল। দুরপাল্লার কোনো বাস ট্রাক সিলেটে এসে পৌঁছায়নি এবং সিলেট ছেড়েও যায়নি। তবে পুলিশ ছাড় দেওয়ায় নগরে ও বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে অনুমোদহীন স্বল্প পাল্লার গণপরিবহন সিএনজি অটোরিক্শা, লেগুনা, ব্যাটারিচালিত রিক্শা ও টমটম চলাচল করে। এতে করে দ্বিগুন ও তিনগুন ভাড়া এবং সময় ব্যয় করতে হয় যাত্রী সাধারণকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিলেট-ঢাকা, সিলেট-তামাবিল, সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক প্রায় গণপরিবহনশূন্য ছিল। তবে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর উপস্থিতি থাকায় এসব সড়কে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্তভাবে জরুরি পণ্যবাহী কিছু গাড়ি, লেগুনা, সিএনজি অটোরিক্সা ও প্রাইভেটকার চলাচল করতে দেখা গেছে। সকাল থেকে সড়কটিতে বাস চলাচল করতে দেখা যায় নি। এছাড়া লেগুনা ও সিএনজির চলাচল একদমই হাতেগোনা। নেই কোন প্রাইভেটকারও। জরুরি পণ্যবাহী কিছু গাড়ি এবং অটোরিকশা ছাড়া সড়কটিতে কোনধরনেরই যান চলাচল লক্ষ্য করা যায় নি।
সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে জরুরী প্রয়োজনে বের হওয়া কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ‘প্রথম দফা অবরোধের দুর্ভোগ কাটিয়ে দ্বিতীয় দফা অবরোধেও একই অবস্থা। আত্মীয়কে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আজ ছাড়পত্র দিয়েছে তাই রোগীকে নিয়ে সড়কে এসে সকাল থেকে দাঁড়িয়েও গণপরিবহন পাচ্ছি না। সুযোগ বুঝে সিএনজিচালকরা বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, সরকার পতনের দাবিতে সিলেটসহ দেশজুড়ে ‘ডু অর ডাই’ আন্দোলনে নেমেছে বিএনপি। পাশাপাশি কর্মসূচী পালন করছে জামায়াত ও সমমনা দলগুলো। একের পর এক হরতাল,অবরোধ করেই যাচ্ছে বিরোধী পক্ষ। মঙ্গলবার বাদ দিয়ে বুধবার থেকে ফের আসছে আরো ৪৮ ঘন্টার অবরোধ কর্মসূচী।উল্লেখ্য গত ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে আয়োজিত মহাসমাবেশ শেষ করতে না পেরে পরদিন হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এরপর ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা তিনদিব্যাপী অবরোধের ডাক দেয় তারা। চরম উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে ১ম দফার ৩ দিনের অবরোধ শেষ হয়েছে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে।
তবে দাবি পূরণ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় টানা ৪৮ ঘন্টা ফের অবরোধ ডাকে বিএনপি, সমমনা দল ও জোট। ২য় দফার অবরোধে গ্রেফতার বাড়লেও অপ্রীতিকর ঘটনা কম ঘটেছে।সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মো: আজবাহার আলী শেখ বলেন, অবরোধ চলাকালে যেকোনো ধরনের নাশকতা ও জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-বিজিবি কাজ করছে। মহাসড়কসহ নগরীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।