ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র দুর্বল আঘাত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ৯:১১:২১ অপরাহ্ন
প্রচুর বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া
স্টাফ রিপোর্টার: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ বাংলাদেশের উপকূল দুর্বল হয়ে অতিক্রম করেছে। এটির প্রভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে, প্রচুর বৃষ্টিও ঝরেছে। এতে বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন। তবে বড় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটেনি।
শুক্রবার বিকেলের দিকে মিধিলি বাংলাদেশের উপকুল অতিক্রম করে। আর দুর্বল হয়ে গভীর নিম্ন চাপ আকারে পটুয়াখালী এলাকায় অবস্থান করে। বেলা চারটার দিকে দেওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আর মিধিলি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় মোংলা ও পায়রা বন্দরে দেওয়া সাত নম্বর বিপদসংকেত নামিয়ে ৩ দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরের ৬ নম্বর বিপদসংকেত নামিয়ে ৩ দেওয়া হয়।আবহাওয়া অধিদপ্তর ও সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছিল, মিধিলি খুব বড় আকারের ঘূর্ণিঝড় হবে না। বাস্তবেও এটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তবে এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়।
সিলেটেও বৃষ্টি ঝরেছে মিধিলির প্রভাবে। দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এসময় সিলেটজুড়ে হিমেল বাতাস বয়ে গেছে। এতে শেষ বিকেলে অনেককে শীতের কাপড়ও পরতে দেখা যায়।আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল পটুয়াখালীতে। বেলা তিনটার দিকে সেখানে ঘণ্টায় ১০২ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বয়ে যায়।আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এলাকায় এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বিকেল ৩ টায় উপকূল অতিক্রম শেষ করে। ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পটুয়াখালী ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি স্থলভাগের ভেতরে আরও উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে।এদিকে, লক্ষ্মীপুরের ফসলি মাঠজুড়ে রয়েছে আমন ধান আর শীতের সবজি। দুই থেকে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে কৃষকেরা ঘরে তুলতে পারবে আমন ধান, আর বাজারে তুলতে পারবে শীতের সবজি। কিন্তু ঠিক এ মুহূর্তে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড়ের কারণে ফসল তোলা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কৃষকরা।
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিল’র প্রভাবে লক্ষ্মীপুর মাঝারি আকারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সঙ্গে মৃদু বাতাসও বইছে। কৃষকরা জানান, বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি না হলেও রবিশস্য বা শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হতে পরে। তবে ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ বাড়লে ধানেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।