ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’তে ৭ জনের প্রাণহানি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ৭:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে মাটির দেয়ালচাপায় ও গাছ পড়ে সারাদেশে ৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফে মাটির দেয়ালচাপায় একই পরিবারের ৪ জন নিহতসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং টাঙ্গাইলের বাসাইলে গাছের ডাল ভেঙে মাথায় পড়ে আবদুুর রাজ্জাক (৪০) নামে এক ব্যবসায়ী, মিরসরাইয়ে গাছ পড়ে সিদরাতুল মুনতাহা আরিয়া (৪) নামে এক শিশু ও সন্দ্বীপে গাছ পড়ে আবদুল ওহাব নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- টেকনাফে দেয়ালচাপায় নিহতরা হলেন- হ্নীলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মরিচ্যাঘোনা এলাকার ফকির আহমদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৫০), ছেলে শহীদুল মোস্তফা (২০) এবং মেয়ে নিলুফা ইয়াছমিন (১৫) ও সাদিয়া (১১)। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় মরিচ্যাঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয়দের বরাতে হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে মরিচ্যাঘোনায় পাহাড়ধসে মাটির দেয়ালচাপা পড়ে পাহাড়ের খাদে বসবাসকারী একই পরিবারের ৪ জন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয়রা মাটি সরিয়ে ৪ জনের মৃতদেহসহ আহতদের উদ্ধার করে। আরও কেউ মাটিচাপা আছে কিনা জানতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।
টেকনাফ থানার ওসি মো. ওসমান গনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ ইমরান উদ্দিন জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গভীর সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে রূপ নিয়েছে। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়ার বৈরী পরিস্থিতি কেটে না যাওয়া পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
এদিকে টাঙ্গাইলের বাসাইলে শুক্রবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে গাছের ডাল ভেঙে আবদুর রাজ্জাক মারা যান। রাজ্জাক উপজেলার মিরিকপুর গ্রামের কুসুম মিয়ার ছেলে। তিনি বাসাইল বাজারের কোটিপতি মার্কেটে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. নাঈম আবদুল্লাহ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরে পরিবার তার লাশ নিয়ে গেছে। ইউএনও পাপিয়া আক্তার বলেন, আমরা নিহতের পরিবারের পাশে আছি।
অন্যদিকে মিরসরাইয়ে দমকা বাতাসে গাছ পড়ে সিদরাতুল মুনতাহা আরিয়া নিহত হয়। শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাপাহাড় কাটাবিল এলাকার হাসমত আলী ভূঁইয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। মুনতাহা ওই বাড়ির আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়ার মেয়ে। তার দাফনের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে ২৫ হাজার টাকার সহায়তা দিয়েছেন ইউএনও মাহফুজা জেরিন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশি ক্ষতি বিদ্যুৎ খাতে। রাতের মধ্যে বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ চালুর চেষ্টা চলছে।
এ ছাড়াও ঘূর্ণিঝড় মিধিলি উপকূল অতিক্রম করার সময় গাছ পড়ে সন্দ্বীপে একজনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয় এ তথ্য জানায়। নিহত আবদুল ওহাব (৬৫) মগধরা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুুল লতিফের ছেলে।