সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার উন্নয়ন করছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ৯:৩৩:২৯ অপরাহ্ন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার উন্নয়ন করছে। এ দেশটা সবার, সবাইকে নিয়েই আমাদের স্বপ্ন। সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাকে অসাম্প্রদায়িক ও আরো সমৃদ্ধশালী অর্থনীতির স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, যেখানে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-সেবা সবার সাধ্যের মধ্যে থাকবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সে উদ্দেশ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বাস্তবায়িত ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের (২য় পর্যায়) সিলেটে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বিভাগীয় পুরোহিত-সেবাইত সম্মেলনে শনিবার ২৫ নভেম্বর তিনি এ কথা বলেন।
কাউকে পিছনে না রেখে সবাই মিলেই উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রার আশাবাদ ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে শত ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করেছি, একটি সংবিধান পেয়েছি। পবিত্র সংবিধানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকল মানুষের সমান অধিকারের কথাসহ সকল বিষয় সরকার অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। এ মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে সবাই নিজ নিজ ধর্ম-কর্ম করে আসছে। এদেশ আমাদের গর্বের ও অহংকারের।
ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক শিখা চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মুঃ আঃ হামিদ জমাদ্দার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হোসাইন মো. আল-জুনায়েদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ দাশ, হিন্দু কল্যাণ বোর্ডের ট্রাস্টি অশোক মাধব রায় ও ইঞ্জিনিয়ার পি. কে. চৌধুরী এবং হিন্দু কল্যাণ বোর্ডের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বাস্তবায়িত ধর্মীয় আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রকল্পটি সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নের একটি বাস্তব উদাহরণ উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণের প্রতিটা বিষয় অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় পূজাম-বে আর্থিক সহায়তাসহ সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করে। কয়েক লক্ষ সিকিউরিটি ফোর্স মোতায়েন করা হয়। যাতে কোন দুর্ঘটনা বা অঘটন না ঘটে ।
আজকের সামাজিক প্রেক্ষাপটে এ ধরনের প্রকল্প ইতিবাচক পরিবর্তনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং এ প্রকল্পের কার্যক্রম আগামীতে অব্যাহত থাকবে আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন মন্দির ও মঠের সংস্কার, নির্মাণ এবং মন্দিরভিত্তিক ধর্মীয় শিক্ষা কার্যক্রম ও সরকারি সহযোগিতা চলমান রয়েছে। হিন্দু ফাউন্ডেশন ও পুরোহিত-সেবাইতদের প্রশিক্ষণ একাডেমির দাবির সাথে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, আগামীতে এ প্রকল্পের ভাতা ও সম্মানী বাড়ানো হবে। বর্তমান সরকার হিন্দুদের সকল দাবি-দাওয়াসহ সকল কার্যক্রম বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রয়াত বড় ভাই আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন হিন্দু ধর্মের কল্যাণে প্রায় আড়াই শত কোটি টাকা অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সুখের বিষয় এ আড়াই শত কোটি টাকার মধ্যে আমার সিলেট সদরে সিলেট-১ আসনে ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। সিলেট মহানগরের ১৭টি মন্দিরে প্রত্যেকটি মন্দিরের ২৫ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। আর সিলেট সদরের চারটি মন্দিরকে দশ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়।
মহাত্মা গান্ধীর জীবনী গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত করে তিনি ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করে বলেন, প্রশিক্ষণে যাতে অন্যান্য ধর্মের মর্মবস্তু নিয়েও আলোচনা করা হয় এবং দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য-রাজনীতি সম্পর্কেও পুরোহিত সেবাইতদের জ্ঞান দেওয়া হয়। তাতে সহমর্মিতা বাড়বে- একে অপরের প্রতি বিশ্বাস বাড়বে । যার ফলে মারামারি-কাটাকাটি কম হবে। বিশ্বাস করতে হবে সব মানুষ এক ঈশ্বরের সৃষ্টি। একারণেই আমাদের বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে জানা এবং বোঝার যথেষ্ট প্রয়োজন আছে। বিজ্ঞপ্তি