ভূমিকম্পের ঝুঁকি প্রবণ সিলেট
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ৮:২৩:০৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট: শনিবার দেশে প্রচন্ড ঝাঁকুনি দিয়ে এক ভূমিকম্প হয়ে গেল। রাজধানী ও কুমিল্লার আশপাশে তা বেশ ভালোভাবে বুঝা গেলেও সিলেটে এতটা বুঝা যায়নি। তবে ভূমিকম্প হলেই আলোচনায় আসে সিলেটের নাম। কারণ সিলেট ভূমিকম্পের অতিঝুঁকিতে রয়েছে। রিখটার স্কেলে ৭ কিংবা এর বেশি মাত্রায় ভূমিকম্প হলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে শাহজালালের এ পুণ্যভূমি। ধসে পড়তে পারে বহু ভবন। এজন্য বড়ো দুর্যোগের আগেভাগেই প্রস্তুতির তাগিদ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে বড়ো ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই আধ্যাত্মিক নগরী। এখানে সহস্রাধিক বহুতল ভবন ধসে পড়তে পারে। পরিস্থিতি এমন হতে পারে, যেখানে তৎপরতা চালানোর মতো কোনো সুযোগ থাকবে না।চলতি বছরে দেশব্যাপী এ পর্যন্ত ১২টি হালকা ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সর্বশেষ শনিবার সিলেটসহ সারা দেশে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল লক্ষীপুরের রামগঞ্জে। বিশ্লেষকদের মত ছোটখাটো ভূমিকম্প বড়ো ভূমিকম্পের আভাস দেয়।
গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বড়ো ভূমিকম্প হওয়ার মতো দুটি উৎস রয়েছে। এর একটি হচ্ছে ডাউকি ফল্ট, অন্যটি সাবডাকশন জোন। সাবডাকশন জোনটি উত্তরে সিলেট থেকে দক্ষিণে কক্সবাজার, টেকনাফ পর্যন্ত। সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো এ সাবডাকশন জোন। এই জোনে ৮০০ থেকে হাজার বছরে কোনো বড়ো ভূমিকম্প হয়নি। এর দক্ষিণে টেকনাফ থেকে মিয়ানমার অংশে ১৭৬২ সালে ৮ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। সেই ভূমিকম্পে সেন্টমার্টিন ডুবন্ত দ্বীপ তিন মিটার উপরে উঠে আসে। তাছাড়া সীতাকু- পাহাড়ে কাদাবালুর উদ্গিরণ হয়।
ভূতত্ত্ববিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অবজারভেটরির সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, সাবডাকশন জোনের যে কোনো জায়গায় ভূমিকম্প হওয়ার মানে হচ্ছে বড়ো ভূমিকম্প হওয়ার পূর্বলক্ষণ।
তিনি বলেন, সাবডাকশন জোন সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ হাওর হয়ে মেঘনা নদী দিয়ে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে চলে গেছে। এ রেখা ভারতের প্লেট, যেটা পশ্চিমে অবস্থিত। সেটি পুবের যে পাহাড়ি অঞ্চল, এর নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। এই জোনে যে বিপুল শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে তাতে ৮ দশমিক ২ থেকে ৮ দশমিক ৯ মাত্রা পর্যন্ত ভূমিকম্প হতে পারে। সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এ বেল্টে যে কোনো জায়গায় যে কোনো সময় ভূমিকম্প হতে পারে। তিনি বলেন, বড়ো মাত্রার ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সিলেট, ঢাকা ও চট্টগ্রাম।