সিলেটে বৃষ্টিতে বিড়ম্বনা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ৭:৩৯:২০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সিলেট ছিল বৃষ্টিস্নাত। এই বৃষ্টির পরই শীত নামবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। তবে দুপুর পর্যন্ত ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি হলেও দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি পরিমাণ বেড়ে যায়। বৃষ্টি বাড়ায় বেড়ে যায় লোকজনের বিড়ম্বনাও।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবেই এই বৃষ্টি বলে আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের উপকূলে আঘাত হানে গত মঙ্গলবার। এর প্রভাবে তিনদিন ধরে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আকাশ মেঘলা। কোথাও বুধবার থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি শুক্রবার পর্যন্ত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারদিনে সিলেটে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে সিলেট আবহাওয়া অফিস। তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অঘ্রাণের মাঝামাঝি হওয়ায় এই সময়টি মূলত শীত মৌসুম। ফলে বৃষ্টির জন্য লোকজনের এখন তেমন প্রস্তুতি থাকে না। তাছাড়া সকালের দিকে বৃষ্টি তেমন না থাকায় ছাতা নিয়েও বের হননি বেশিরভাগ লোকজন। দুপুর একটার পর হঠাৎ বৃষ্টি বাড়ায় বাইক নিয়ে বের হওয়া লোকজন সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন। বিড়ম্বনায় পড়েন ফুটপাতের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারাও। বৃষ্টির প্রভাবে মানুষজন খুব একটা রাস্তায় বের হননি। দু এক জায়গায় চৌরাস্তার মোড়ে লোকজনের জটলা ও যানজট দেখা গেছে। তবে জিন্দাবাজার, জেলরোড, লামাবাজার, বন্দর লালবাজার, আম্বরখানা পয়েন্টসহ প্রধান সড়কগুলোতে চৌরাস্তার কাছাকাছি ছাড়া অন্য কোথাও তেমন লোকজন দেখা যায়নি। কোর্ট পয়েন্ট, বন্দরবাজারসহ কয়েকটি ব্যস্ততম এলাকায় মানুষের তুলনায় সিএনজি ও লেগুনার জটলাই বেশি দৃশ্যমান ছিল। অবরোধ চলমান থাকায় সড়কের পাশে বড়ো বড়ো দোকানের সাঁটার ছিল অর্ধেক খোলা। এরবাইরে দোকানপাটে ক্রেতার সংখ্যা ছিল কম। একদিকে অবরোধ অন্যদিকে বৃষ্টি মিলে সপ্তাহের শেষদিনে ব্যবসা খুব মন্দা ছিল বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এমনিতে অবরোধের শেষদিন হওয়ায় কয়েক সাপ্তাহ থেকে বৃহস্পতিবার ছিল ব্যবসার দিন।
নগরীর জিন্দাবাজারের ব্যবসায়ী ও কাকলী মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জাকারিয়া ইমরুল জানান, অবরোধে ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। তবে গত দুইমাস ধরে বৃহস্পতিবার ভালো ব্যবসা হচ্ছিলো। শুক্র শনি অবরোধ না থাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরের পর মার্কেটগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা বাড়তো। তবে এই বৃহস্পতিবার তা হয়নি। বৃষ্টির জন্য ক্রেত কম।
নগরীর কোর্ট পয়েন্টে কথা হয় জাকারিয়া মজুমদার নামে এক ব্যবসায়ীর সাথে। তিনি জানান সকালে বৃষ্টি তেমন নেই দেখে বাইক নিয়ে বেরিয়েছিলাম। মনে করেছিলাম দুপুরের দিকে তাও থাকবে না। কিন্তু উলোটা জোহরের পর থেকে বৃষ্টি বেড়ে গেছে। এখন বাইক নিয়ে পড়েছি মুশকিলে। বাইক না থাকলে সিএনজি করে বাসায় চলে যেতাম।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম উত্তর দিকে এগিয়ে দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়ে গুরুত্বহীন হয়ে গেছে। এরআগে বুধবার সন্ধ্যায় এটি ছিল উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও এর কাছাকাছি দক্ষিণ ওডিশা এলাকায়। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হয়ে চলেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে মিগজাউমের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টির রেশ আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত থাকবে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ। তিনি বলেন, শনিবার বৃষ্টি অবশ্য কমে আসবে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টির কারণে শীত অনুভূত হতে পারে খানিকটা। বৃষ্টি চলে যাওয়ার দুই দিন বাতাসে আর্দ্রতা থাকবে। তাই তাপমাত্রা কমবে না তেমন। তবে দুই দিনের মধ্যে আর্দ্রতা কমে গেলে সোমবার থেকে শীত বাড়তে পারে।