হাওরপাড়ের ৩৫ গ্রামের বাসিন্দাদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ৭:১৮:২০ অপরাহ্ন
জামালগঞ্জের তেরানগর দৌলতা ব্রীজ
জামালগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ও ভীমখালী ইউনিয়নের মিলনস্থল তেরানগর গ্রামের পাশে দৌলতা নদীর ব্রীজ এখন মরনফাঁদে পরিণত হয়েছে। মাত্র ৯৯ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রীজটি এখন পায়ে হেঁটে চলার মতোও অবস্থা নেই। ফলে হাওরপাড়ের ৩৫ গ্রামের হাজার-হাজার বাসিন্দা চলছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
হেমন্তের প্রায় সাত মাস এই ব্রিজ দিয়ে হাওর এলাকার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চল ও ভীমখালী ইউনিয়নের কিয়দাংশের হাজার-হাজার মানুষ চলাচল করেন এই ব্রীজ দিয়ে। দীর্ঘ এক যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন জনসাধারণ। বিগত ২০০৬ সালে ২৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে সরু আকারে ব্রিজটি নির্মাণ করার সময় নি¤œমানের কাজের অভিযোগ ছিল বলে এলাকার লোকজন জানান। যে কারণে নির্মাণের ৮ বছর না যেতেই পরিবহন চলাচলে সক্ষমতা হারিয়ে যায়। ২০১৩ সালে এলজিইডি বিভাগ এই ব্রীজকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। এরপর স্থানীয় ক’জন সংবাদকর্মী এই ব্রিজ নিয়ে অব্যাহত সংবাদ প্রকাশ করলে উপজেলা এলজিইডি বিভাগ থেকে দৌলতা নদীর ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণের প্রস্তাবনা প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। কিন্তু তেরানগর দৌলতা ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা গুরুত্ব না দেবার কারণে এর কোন অগ্রগতি হয়নি বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের সময়কালে এ বিষয়ে শীর্ষ নেতাদের কাছে এলাকার লোকজন বার বার ধর্ণা দিয়ে ব্রিজটি পুনঃনির্মাণের দাবী জানালেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। শীর্ষ নেতারা কেউই তেরানগর ব্রিজ নির্ভর এলাকাবাসীর জনদাবীকে মূল্যায়ন করেন নি বলেও একাধিকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এই ব্রিজ দিয়ে জামালগঞ্জ এবং পার্শ্ববর্তী দিরাই উপজেলার কিয়দাংশের লোকজন নিয়মিত যাতায়াত করেন। তাছাড়া হাওরে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ কৃষিজাত পণ্য এই ব্রিজ দিয়ে পরিবহন করতে হয়। কিন্তু সরু কাঠামোর কারণে মালবাহী যানবাহন চলাচলের সুবিধা না থাকায় ফড়িয়া দালাল চক্রের কাছে কম দামে পণ্য বিক্রি করে চরমভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাওরপাড়ের নি¤œ আয়ের লোকজন। তাছাড়া মুমূর্ষু রোগিদের চিকিৎসার জরুরি প্রয়োজনে মোটর সাইকেলই একমাত্র ভরসা। সম্প্রতি জামালগঞ্জ উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন চালু হয়েছে। কিন্তু জামালগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলে তেরানগর ব্রিজ নির্ভর এলাকায় কোথাও অগ্নিকান্ড সংঘটিত হলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এই ব্রিজ দিয়ে যেতে পারবে না। ফলে ফায়ার সার্ভিস সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়ে যাচ্ছে বিপুল জনবসতি। এছাড়া জামালগঞ্জের অভ্যন্তরিন সড়ক যোগাযোগের বেহাল দশার কারণে এখনো জনসাধারণ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডি বিভাগের জামালগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো: আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, তেরানগর গ্রামের পাশে দৌলতা নদীর উপরে ব্রীজ আর বেহেলী রাস্তার সাচনা চৌধুরী বাড়ির ব্রীজ এই দুইটি ব্রীজ নির্মাণে আমাদের প্রতিবেদনের পর সিলেট এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ারসহ টিম এসে ব্রিজটি পরিদর্শন ও সার্ভে করেন। এর পর বেহেলী রোডের চৌধুরী বাড়ির ব্রিজটির কাজের ফাইল অনুমোদন হলেও তেরানগর দৌলতা নদীর ব্রীজ নির্মান ফাইল এখনো অনুমোদন পায়নি।