এবারো খুলছেনা ক্বীনব্রিজ!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১০:৪৫ অপরাহ্ন
৪র্থ ধাপের সময় শেষ হচ্ছে কাল
স্টাফ রিপোর্টার : ৪ মাসেও শেষ হয়নি নগরীর প্রবেশদ্বার ক্বীনব্রিজের সংস্কার কাজ। এর মাঝে সময় বাড়ানো হয়েছে ৪ বার। সর্বশেষ সময় বাড়িয়ে ১৬ ডিসেম্বর ব্রিজ খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় ফের বাড়ছে সময়। প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফর শেষে ব্রিজটি খুলে দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জানুয়ারীর আগে ব্রিজটি খুলে দেয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। ফলে আবারো দীর্ঘায়িত হচ্ছে জনদুর্ভোগ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংস্কারের জন্য ক্বীনব্রিজ বন্ধের সাড়ে ৪ মাস পার হয়েছে। দুইমাস সময় হাতে নিয়ে সংস্কার কাজ শুরু করলেও সাড়ে ৪ মাসেও শেষ হয়নি কাজ। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন নির্ধারিত সময়ের আগেই সংস্কার কাজ শেষ হবে, খুলে দেওয়া হবে ক্বীনব্রিজ। সর্বশেষ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা হয়নি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আবার নতুন করে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে এরমধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে এই নির্ধারিত সময়েও কাজ শেষ করতে না পারায় ব্রিজটি খুলতে পারেন নি তারা। ফলে আরেক দফা বাড়ছে সময়।
জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ আগস্ট কিনব্রিজ মেরামত, নবায়নসহ নির্মাণকাজের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দুইমাস ব্রিজের উপর দিয়ে সবধরনের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর পথচারীদের চলাচল বন্ধ করতে সেতুটির দুই পাশে দেওয়া হয় টিনের বেড়া।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল প্রকৌশল বিভাগ সংশ্লিষ্টদের মতে, ক্বীনব্রিজের মেরামতকাজ প্রায় শেষ। এরপরও শেষের দিকের কিছু কাজ বাকী রয়েছে। ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট সফর উপলক্ষে পুরো নগরজুড়ে সকল সড়কের সংস্কার কাজ চলছে। তাই এই মুহুর্তে ব্রিজটি চলাচলের জন্য খুলে দেয়া যাচ্ছেনা। তবে প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফর শেষ হওয়া মাত্রই ব্রিজটি খুলে দেয়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী বলেও জানান তারা।
পথচারী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে যাতায়াতের সহজপথ ক্বীনব্রিজ। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে মেরামতকাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়ে গেছে। ব্রিজ মেরামতের কাজ ধীরগতিতে চলায় বেশ কষ্ট পোহাতে হচ্ছে ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষেন। সেতু দিয়ে চলাচল করতে না পারায় দীর্ঘ পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে সময় ও টাকা উভয়ই বাড়তি লাগছে। লাভবান হচ্ছে খেয়া পারপারের ইজারাদাররা এবং সিএনজি অটোরিকশা চালকরা।
সেতু মেরামতের কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্রিজের মেরামতকাজ চলমান। দুই মাসের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও সংস্কার করতে গিয়ে সেতুর দুই পাশের পাত অকেজো অবস্থা পাওয়া গেছে। যা আগের হিসাবে ছিলনা। এ জন্য নির্দিষ্ট সময়ের তুলনায় বেশি সময় লাগছে। সেতুটি দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করতে আরও বেশী শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে কাজ করা হয়। ১৬ ডিসেম্বরের আগেই পথচারীদের জন্য ক্বীনব্রিজ খুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা থাকলেও শেষ সময়ের কিছু কাজ শেষ না হওয়ায় আরো সপ্তাহখানেকের আগে ব্রিজ খুলা সম্ভব হচ্ছেনা।
এ ব্যাপারে রেলওয়ের সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (পূর্বাঞ্চল) জিসান দত্তের সাথে কথা বলতে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, ব্রিজটি সওজের অধীনে থাকলেও সংস্কার কাজ করছে রেলওয়ে বিভাগ। সংস্কার কাজ করতে গিয়ে নতুন করে আরো কিছু ত্রুটি ধরা পড়ে যায়। ফলে সংস্কার কাজে একটু বেশি সময় ব্যয় করতে হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে সব কাজ শেষ করে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফর ঘিরে অন্যদিকে ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় এই মুহুর্তে ব্রিজটি খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। তবে প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফর শেষ হওয়া মাত্রই ব্রিজটি খুলে দেয়া হবে।