উনাই হাওর সবুজ মাঠে হলুদের মিতালী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ৬:২৭:২৮ অপরাহ্ন
গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার উনাই হাওর সেজেছে অপরূপ সাজে। সবুজের বুকে হলুদ সরষে ফুলের ঢেউ খেলানো মাঠে দিগন্তে হারিয়ে যাওয়া সূর্যাস্তের দৃশ্য আকৃষ্ট করেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। উনাই হাওরে হাজার বিঘা সরিষা গম ও বিভিন্ন সবজি চাষে কৃষকের কাটছে ব্যস্ত সময়।
গোয়াইনঘাটের উনাই হাওরে কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সেজেছে মাঠ। সবুজ শাক সবজি আর সরিষার হলুদ ফুলে সুবাসিত মাঠ। পড়ন্ত বিকেলে মাঠের বুকে ঢেউ খেলানো হলুদ আর সবুজের মিতালীতে সৃষ্টি হয় মনমাতানো সৌন্দর্যের। আলীরগ্রামের প্রায় আড়াই শত পরিবারের দেড় হাজার নর নারীর পেটের খোরাকের যোগান দিচ্ছে উনাই হাওর। এক সময়ের পতিত থাকা শত শত বিঘা জমি গত প্রায় তিন যুগ ধরে গ্রামবাসিকে দিচ্ছে সবুজ সোনার সন্ধান। এ বছর প্রায় হাজার বিঘা জমিতে হয়েছে সরিষা চাষ। গ্রামের কৃষক সুরুজ আলী ও আব্দুল মালিক জানান, দুজনেই বিশ বিঘার মত সরিষা চাষ করেছেন। প্রতিবিঘায় ভাল ফলন হলে ৯/ ১০ মন সরিষা পাওয়া যাবে। প্রতিমন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হয়। গড়ে বিঘায় চার মন হলেও এই হাওরে সোয়াকোটি টাকার সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন তারা।
উপজেলা প্রশাসন, পরিষদ ও কৃষিবিভাগের নানা উদ্যোগ, সরকারের প্রণোদনা, আধুনিক চাষাবাদে প্রশিক্ষণ ও কৃষি যান্ত্রিকি করণে উৎসাহিত গোয়াইনঘাটের কৃষক এখন মাঠে সবুজ সোনা ফলাতে সক্ষম হচ্ছেন। যা ২০০৭ সালের পূর্বে ছিলনা। আর শাক সবজি চাষেও এ উপজেলার কৃষকরা রাখছেন অনন্য অবদান। লাভবান হচ্ছেন আর্থিকভাবে। কৃষকরা জানান, ধানের চাইতে কম শ্রম, কম খরচে সরিষা উৎপাদন করে ধানের চেয়ে ২/৩ গুন বেশী দাম পাওয়া যায়। সুরুজ আলী ও আব্দুল মালিক বলেন, কৃষিতে সরকারী প্রণোদনা সার বীজ কৃষকদের দিলেও প্রকৃত কৃষকরা তা পায় না। ফলে সে হারে উৎপাদন হয় না। আমরা প্রতি বছরই দেশী বীজ ও নিজের খরচে চাষ করে আসছি।
এক সময়ের পতিত উনাই হাওর সময়ের পরিক্রমায় আজ শত শত পরিবারের আহার যুগিয়ে অর্থনৈতিক সফলতার পথ দেখিয়ে দিচ্ছে। আর তাদের হাতের ছোঁয়ায় উনাই হাওর হয়ে উঠেছে প্রকৃতির অনন্য সৌন্দর্যে। যেখানে সবুজের বুকে হলুদের মিতালী। সূর্যোদয় সূর্যাস্তের লাল আভায় প্রকৃতিপ্রেমীকে আকৃষ্ট করে।