বিদেশে পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাত প্রতারক চক্রের সদস্য গ্রেফতার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ৬:৩৭:১৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বিদেশে পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার দুপুরে র্যাব-৯ এর মিডিয়া কর্মকর্তা মো. মশিহুর রহমান সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত প্রতারকের নাম সজিব কান্তি হালদার (৪২)। সে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার টেকেরহাট এলাকার বাসিন্দা। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিলেট নগরীর তালতলা এলাকায় র্যাব-৯ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে গ্রেফতারকৃত সজিব কান্তি হালদারকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।
র্যাব-৯ জানায়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারক চক্রের সদস্যরা মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চ বেতনে চাকুরী দেয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বেকার যুবক-যুবতীদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে সর্বশান্ত করছে এবং বিদেশে গিয়ে তারা নানা হয়রানির শিকার হচ্ছে। গত ২২ নভেম্বর এমন প্রতারণার শিকার এক ভিকটিম বাদী হয়ে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, আসামী সজিব কান্তি হালদার ওই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা। তিনি প্রতারক চক্রের অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় বাংলাদেশ হতে রোমানিয়ায় উচ্চ বেতনে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকুরী দেয়ার নাম করে ভিকটিম এবং তাদের অভিভাবকদের প্রলুব্ধ করে প্রথমে পাসপোর্ট এবং প্রাথমিক খরচ বাবদ ভিকটিমসহ আরও ২ জনের নিকট থেকে ৫০ হাজার করে মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নেয়। তারপর ওয়ার্ক পারমিট, পরিবহন খরচ, ভিসা প্রসেসিং, মেডিকেল খরচ, বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স ইত্যাদি খরচের কথা বলে আসামীরা ধাপে ধাপে ভিকটিমদের নিকট হতে ব্যাংক হিসাব ও নগদে সর্বমোট ২১ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। পরবর্তীতে, আসামীরা ভিকটিমদের যথাসময়ে বিদেশ নিতে না পারায় ভিসা যাচাইয়ের জন্য তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ই-মেইল করে জানতে পারে আসামীদের কর্তৃক প্রদত্ত সমস্ত কাগজপত্র ভুয়া। প্রতারণার এই ঘটনাটি সিলেটসহ দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এরই প্রেক্ষিতে আসামীদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব-৯ চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে র্যাব আরো জানায়, প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ‘ইমপেক্ট গ্লোবাল’ নামক ট্রাভেল এজেন্সির সাথে সজীব কান্তির সম্পৃক্ততা রয়েছে। এই আসামীর ট্রাভেল এজেন্সি বা রিক্রুটিং এজেন্সি পরিচালনার কোন লাইসেন্স পাওয়া যায় নি। স্বল্প সময়ে, বিনাশ্রমে অধিক অর্থ উপার্জনই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য। ইতোমধ্যে বিগত বছরগুলোতে প্রতারক চক্রটি মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর নাম করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। প্রতারক চক্রের অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে র্যাব-৯ এর গোয়েন্দা তৎপরতা এবং চলমান অভিযান অব্যাহত আছে।