বিএনপি ও জামায়াতের নতুন ২ দিনের কর্মসূচি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ৯:২৩:৩২ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট বর্জন এবং অসহযোগ আন্দোলন সফলে আরও দুদিনের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। যুগপৎভাবে এই কর্মসূচি পালিত হবে। নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী, শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) ও শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এদিকে আরো ২ দিনের কর্মসূচী দিয়েছে জামায়াতসহ সমমনা দল ও জোট।
প্রসঙ্গত, তিন দিনব্যাপী লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। কর্মসূচি পালনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান রিজভী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে বহু কষ্টে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করতে পারছে না দেশের জনগণ। মাঝেমধ্যে এমন শাসক ক্ষমতায় আসেন তারা জনগণের কাঁধে চেপে বসেন। এখন আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অবলীলায় মিথ্যা কথা বলছেন। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে এসব করছেন।
তিনি বলেন, সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা যেন মাস্তানের মতো কথা বলছেন। বিশেষ করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান যে ভাষায় কথা বলেন তা সম্পূর্ণ ছাত্রলীগের নেতাদের মতো। তিনি রাতের আঁধারে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, কৃষকদল নেতা মেহেদী হাসান পলাশ তাদেরকে ধরে জোর করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করছে। সবকিছুই মনিটরিং করছে সরকার আর বাস্তবায়ন করছে তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার মধ্যে বিএনপির নেতাকর্মীরা কিভাবে নাশকতা করে? আসলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন পুলিশের নজরদারির মধ্যে বন্দি।
রিজভী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, আমরা কিন্তু বেলুচিস্তান ও রাজস্থান থেকে আসিনি। আমরা এ দেশের সন্তান। এ দেশের আলো বাতাস ও মাটির গন্ধ আমাদের গায়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী আপনি কি চান? সেটা বলে দেন। মনে রাখবেন এসবের হিসাব কিন্তু জনগণের কাছে দিতে হবে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যত নাশকতাকারী হাতে নাতে ধরা হয়েছে তার সবই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের লোকজন। যেভাবে ২০১৩-২০১৪ সালে সরকার ও তার সংস্থার লোকেরা পরিকল্পিতভাবে নাশকতা করেছে এখনো তেমনই করা হচ্ছে।
‘নির্বাচন ইস্যুতে কোনো বিশৃঙ্খলা সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে‘- গোয়েন্দা প্রধানের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, আমরাও কিন্তু সংবিধান পড়েছি। ওটাতে হিব্রু ভাষায় লেখা নেই। সুতরাং আপনারা নিজেরাও সংবিধান ভালোভাবে পড়ুন। দেশের ইতিহাস জানুন। এতই যদি সংবিধানপ্রীতি আপনার বা আপনার সরকারের থাকত তাহলে ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের অধীনে নির্বাচন কেন করলেন? সেখানে তো সংসদ ভেঙে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করার কথা বলাছিল। কিন্তু তারা কেন দুই বছর ক্ষমতায় থাকল?
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশের পর ২৯ অক্টোবর থেকে দলটি চার দফা হরতাল ও ১৩ দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এরপর আবারও নতুন কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম এক বিবৃতিতে বলেছেন, “প্রহসনের নির্বাচন বর্জন ও ভোটদান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গত ২১, ২২, ২৩ ডিসেম্বর এবং ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর দুই ধাপে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি পালন করেছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রহসনের নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে জনগণ নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বাাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দল ব্যতিরেকে নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে। জনগণ এ নির্বাচন মেনে নিবে না। আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ঘোষিত গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি আগামী ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।