সুনামগঞ্জে ৪ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ৬:৩১:৪২ অপরাহ্ন
জসীম উদ্দিন, সুনামগঞ্জ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জের ৫ টি আসনের মধ্যে সুনামগঞ্জ-৩ শান্তিগঞ্জ-জগন্নাথপুর আসনের নৌকার মনোনীত প্রার্থী পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায় নির্ভার তিনি। যদিও এ আসনে সাবেক এমপি শাহিনুর পাশা এক সময়ের হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন। তিনি জমিয়ত থেকে দলত্যাগী হওয়ায় এবং সরকার দলীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি সামনে আসায় বিতর্কিত হয়ে আছেন ভোটারের মুখে মুখে। নির্ভার হলেও এম এ মান্নান ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রচারণায় পিছিয়ে নেই পাশাও। তবে এ আসনে ভোট নিয়ে আগ্রহ নেই ভোটারের। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। বাকি চারটি আসনে ভোটাররা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন।
সুনামগঞ্জ-১ আসন জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, মধ্যনগর ও ধর্মপাশা নিয়ে গঠিত। এখানে প্রার্থী বেশি হলেও ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা। এখানে নৌকা পেয়েছেন সিলেট মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রণজিৎ চন্দ্র সরকার। তার সাথে কেটলি প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন টানা ৩ বারের এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং ঈগল প্রতিক নিয়ে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ালীগের সদস্য সেলিম আহমেদ। এ তিনজন প্রার্থীই ভোটের মাঠে সরব প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তারা ভোটারের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছেন। স্থানীয় ভোটাররা এ ৩ প্রার্থীরা মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন।
সুনামগঞ্জ-২ আসন দিরাই ও শাল্লা নিয়ে গঠিত। এখানে নৌকা সেন পরিবারের হাতছাড়া হয়েছে। এবার নৌকা পেয়েছেন আইজিপির ছোট ভাই আব্দুল্লা আল মাহমুদ। জয়া সেন কাঁচি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনে জয়া সেনের পক্ষে বেশীরভাগ দিরাইর ভোটার দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে শাল্লার ভোটাররা আল আমিনের পক্ষ নিচ্ছেন। দু’দিকেই আওয়ামীলীগের লোকজনও ভাগাভাগি হয়ে আছেন। ফলে এ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে মনে করছেন ভোটাররা।
সুনামগঞ্জ-৪ সদর ও বিশ্বম্বরপুর আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী সাবেক পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক এবং জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী পীর মিছবাহ লাঙল প্রতিক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন। এ আসনে পীর মিছবাহ দুইবার এমপি ছিলেন। তার হাত ধরে অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বরাবরই এ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয় আওয়ামীলীগ। বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে তার। এদিকে, দীর্ঘদিন পর আওয়ামীলীগের হাতে এ আসনটি আসায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। ব্যক্তি ইমেজ থাকায় বিএনপির বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান তার পক্ষে মাঠে কাজ করছেন। এ আসনে নিশ্চিত করে বলা না গেলেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলছে।
সুনামগঞ্জ-৫ আসন ছাতক-দোয়ারা নিয়ে গঠিত। এখানে ৫ বারের এমপি মুহিবুর রহমান মানিক নৌকা প্রতিক পেয়েছেন। তৃণমূলের মানুষের সাথে তার রয়েছে গভীর যোগাযোগ। অন্যদিকে শামিম আহমেদ চৌধুরী ঈগল প্রতিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। ভোটাররা জানালেন বর্তমান এমপি মানিক ৫ বারের এমপি হয়েও রাস্তাঘাটের বেহাল দশা এবং বিভিন্ন মামলায় ভিন্ননমতের লোকজনকে হয়রানি করার বিষয়টি সামনে উঠে এসেছে। ভোটারদের মনে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। এ আসনে মানিক দীর্ঘদিন এমপি থাকলেও পার পাওয়া অনেকটা কঠিন মনে করছেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে শামিম চৌধুরী ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে লড়াইয়ে এসেছেন। সব মিলিয়ে হাডাহাড্ডি লড়াইয়ে আছেন দুজন।