এবারের নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হবে : সিইসি হাবিবুল আউয়াল
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ৮:৪৬:০০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হবে। নির্বাচনে কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ হবে না। নির্বাচন যেকোনো মূল্যে নিরপেক্ষ হতেই হবে। সিইসি বলেন, বিএনপির নির্বাচন বর্জন শান্তিপূর্ণ হলে তা চ্যালেঞ্জ নয়। তবে ভোটের দিন বা তার আগের দিন ভোটারদের বাধা দিলে সেটা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। সেটা মোকাবিলা করা হবে।
শনিবার সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
সিইসি বলেন, যে কোনো নির্বাচনে কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকে। বিএনপি এবারের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে জনগণকে নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানাচ্ছে। সেটা শান্তিপূর্ণভাবে হলে আমাদের কাছে কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। যদি তারা প্রতিহত করতে চায় তাহলে যে চ্যালেঞ্জ আসবে সেটার মোকাবিলা করতে হবে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলা হয়েছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক অধিকার অনুযায়ী একটি নির্বাচনের পক্ষে যেমন বলা যায় তেমনি বিপক্ষেও বলা যায়। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করা যায় না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সেটা ফুটিয়ে তোলা হবে গণমাধ্যম ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে। ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ও বৈধ ব্যক্তি ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। অবৈধ ব্যক্তি প্রবেশ করে নির্বাচন প্রভাবিত করতে চাইলে সাংবাদিকরা তা প্রচার করবেন। নির্বাচনের প্রকৃত অবস্থা সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশ তথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরলে ‘ক্রেডিবিলিটি’ সংকট কেটে যাবে।
মানুষ ভোটকেন্দ্রে থেকে বেরিয়ে যদি বলে ভোট দিতে পেরেছি, এরকম খবর যদি সারাদেশ থেকে আসে তাহলে সার্বিকভাবে বোঝা যাবে ভোটটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে।সিইসি বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশের প্রয়োজন। এ পরিবেশ তৈরিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজ করতে হবে। এবারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিচরণের ঘনত্ব থাকবে। তারা ভ্রাম্যমাণ থাকবে যাতে সাধারণ ভোটাররা বুঝতে পারে রাষ্ট্র তাদের সঙ্গে আছে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগ নির্বাচনে ইসির নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করবে। আমরা তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে বলেছি তাদের আচরণ জনগণের কাছে পক্ষপাতমূলক মনে না হয়।
সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর কাছে পৃথিবীর কোনো দেশই বিচারিক ক্ষমতা দেয় না। আমাদের এখানেও দেয়া হবে না।বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কেন আন্তর্জাতিক মহল কথা বলছে তার ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস ও আইসিসিপিআরে (ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস) অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। যে কারণে রাষ্ট্রের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিও বাংলাদেশের দায়বদ্ধতা আছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনের দিন ব্যান্ডউইথ কমানো হবে না। সেদিন যদি ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দেওয়া হয়; দুটি কারণে আমি জানতে চেয়েছিলাম, একটি হলো অপপ্রচার-সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক কিছু বানিয়ে নির্বাচনকে বরবাদ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ব্যান্ডউইথটা থাকবে।
এর আগে সিলেট জেলার ৬টি আসনের ৩৫ প্রার্থীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। শনিবার সকাল ১০টায় সিলেট সার্কিট হাউজে এই সভা হয়।সভায় সিইসি বলেছেন, এবারের নির্বাচনটা অবশ্যই অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, আমরা সরকার থেকে থেকে জনবলের যে সহায়তা পেয়েছি সেটা দিয়ে নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।
প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী চলা এই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী।সংসদ সদস্য প্রার্থী ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী, জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান, পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ্ মিজান শাফিউর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান ও পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।