সাঙ্গ হচ্ছে প্রচার
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ৩:২০:১১ অপরাহ্ন
একদিন পরেই ভোট
প্রার্থীদের বিরামহীন ব্যস্ততা
জালালাবাদ রিপোর্ট : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ শুক্রবার সকাল ৮টায়। সেই হিসাবে আজই আনুষ্ঠানিক প্রচারণার শেষ দিন।
ফলে গতকালই মূলত প্রচারণা হয়ে গেছে। শেষ দিনের প্রচারণায় তাই ব্যস্ত ছিলেন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। প্রার্থীরাও তাদের নির্বাচনি এলাকায় বড় ধরনের শোডাউন করে নিয়েছেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমের খবরে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় প্রচার প্রচারণা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনও প্রার্থী জনসভা, পথসভা, মিছিল বা শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারবেন না। কালকের দিন বাদেই হবে আলোচিত-সমালোচিত বিএনপি-জামায়াতবিহীন এ নির্বাচনের ভোটগ্রহন।
এবার সিলেটের বেশির ভাগ আসনেই ভোটের মাঠের উত্তাপ না থাকলেও প্রচারে কমতি রাখেন নি প্রার্থীরা। দিন-রাতের বড় অংশজুড়েই ভোটারদের দৃষ্টি কাড়তে চলেছে মাইক, এলইডি মনিটর, লাউড স্পিকারের ব্যবহারও; উচ্চ শব্দের এমন প্রচারে অনেক স্থানেই যন্ত্রণায় পড়েন স্থানীয়রা। নিয়ম না মেনে উচ্চ শব্দে নির্বাচনি প্রচারে মাইক, লাউড স্পিকারে বাজানো ভোটের গান শব্দ দূষণের মাত্রা ছিলো অসহনীয়।
এদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনি প্রচারণার শেষ দিনে বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) শেষ নির্বাচনি জনসভায় অংশ নেন। ঢাকার অদূরে বন্দরনগরী নারায়ণগঞ্জে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া গতকাল জাতির উদ্দেশে ভাষণও দেন প্রধানমন্ত্রী।
ওদিকে, সর্বশেষ গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করেছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটারদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগে উৎসাহিত করছে, কিন্তু তাদের ভোটকেন্দ্রে যেতে জোরারোপ করছে না।
‘ইন এইড টু দি সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম গতকাল পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
প্রচার প্রচারণা শেষ হওয়ার এক দিন বাদে ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২৯৯টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নওগাঁ-২ আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় ওই আসনের ভোট বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও)-এর ৭৮ ধারায় নির্বাচনে প্রচারের সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ভোট গ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা এবং ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্বাচনি এলাকায় কোনও জনসভা আহ্বান এবং অন্য কেউ জনসভার আয়োজন করলে সেখানে অংশ নেওয়া যাবে না। এমনকি মিছিল, শোভাযাত্রা বা এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন বা অংশগ্রহণ কোনোটিই করা যাবে না।
এদিকে ভোটের মাঠের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয় নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে বাহিনীগুলোর প্রধানরা মাঠের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পুরোটাই ইসিকে অবহিত করেছেন। ইসির পক্ষ থেকেও তাদের সর্বশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনের দিন সকালে ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছাবে। অবশ্য চার হাজারের বেশি দুর্গম ভোটকেন্দ্রে শনিবার ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। যাতায়াত পথ বিবেচনায় এসব কেন্দ্রে আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে, গতকাল পর্যন্ত নানামুখী হিসাব-নিকাশে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছেন কোনো কোনো প্রার্থী। তবে প্রায় ২০০ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই।
২৮ রাজনৈতিক দলের হয়ে এবার লড়াই করছেন ১ হাজার ৫৩৪ প্রার্থী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন ৪৩৬ জন। অন্যদিকে, বিএনপি-জামায়াতসহ নিবন্ধিত ১৬ রাজনৈতিক দল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ভোট ঠেকানোর আন্দোলনে রয়েছে।
সিলেটের ১৯ আসনে এবার মোট প্রার্থী ১১৭ জন। এরমধ্যে সিলেট জেলার ৬ আসনে ৩৫ জন, হবিগঞ্জের ৪ আসনে ৩১, মৌলভীবাজারের ৪ আসনে ২২ জন ও সুনামগঞ্জের ৫ আসনে ২৯ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে লড়বেন। আর এবার দেশে ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৯ আসনে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মোট এক হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী।
এবারের নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক শোকজ, তলব, সতর্ক ও জরিমানার পরও প্রার্থীদের বাগে আনতে পারছে না ইসি।
কমিশনের রক্তচক্ষুর আড়ালে সারাদেশে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের হুমকি-ধমকি, হামলা, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ নানা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছেন অনেক প্রার্থী। এসব অভিযোগে গতকালও কয়েকজন প্রার্থী ও তাদের সমর্থককে শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।