সিলেট-২ আসনে একসঙ্গে নির্বাচন বর্জন করলেন ৪ প্রার্থী ভোটারের উপস্থিতি ছিল নগণ্য
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ৭:২৩:৫৯ অপরাহ্ন
মোঃ মুহিব হাসান, ওসমানীনগর : সিলেট-২ আসনে (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সিলেট জেলা আ’লীগের সভাপতি সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরীর লোকজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ এনে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে নির্বাচন বর্জন করেছেন ৪ প্রার্থী। প্রার্থীরা হলেন, গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী বর্তমান এমপি মোকাব্বির খান, জাপা মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আব্দুর রব মল্লিক।রোববার দেড়টায় ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে একটি অভিজাত হোটেলে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা। এসময় তাদের সাথে দলীয় নেতা কর্মী এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্যের আইনজীবি মো: আব্দুর রব মল্লিক বলেন, আমার বাড়ির কেন্দ্র থেকে জোর করে আমার এজেন্ট বের করে দিয়েছে আওয়ালীগের নেতা কর্মীরা। আমি নিজে গিয়ে প্রতিবাদ করেও কোন ফল হয়নি। এভাবে আশপাশের সকল কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দিয়ে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর, সৎপুর, ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর, সাদীপুর, দয়ামীর ইউনিয়নের অনেক কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের আওয়ামীলীগের লোকজন জোর করে বের করে দিয়ে শফিক চৌধুরীর লোকজন জাল ভোট দেয়। আমি প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়ে কোন ফল পাইনি।
জাপা মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি ই্য়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া বলেন, বিশ্বনাথ ওসমানীনগরের প্রায় সকল কেন্দ্র থেকে আমার সকল এজেন্টদের বের করে দিয়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা জাল ভোট প্রদান করে। আমি বিষয়টি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানালে তিনি বলেন, লিখিত দিতে। আমি লিখিত দিতে দিতেই তো তারা জাল ভোট দিয়ে কাম শেষ করে দিয়েছে। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাও লিখিত দেওয়ার কথা বলেন। কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দিয়ে জাল ভোট হচ্ছে, আর প্রশাসন তা বন্ধ না করে আমাদের কাছে লিখিত চাচ্ছে।
গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী বর্তমান এমপি মোকাব্বির খান বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দল আন্দোলন করছে। সরকার বলছে এটা জ্বালাওপোড়াও। আমরা নির্বাচনে আসতে চাচ্ছিলাম না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, নির্বাচন ফ্রি হবে। তাই আমি নির্বাচনে আসছিলাম। এখন আমাদের সকল প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দিয়ে জাল ভোটের মাধ্যমে একটি একদলীয় প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে। তাই আমরা আজ দুপুরেই সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জন করলাম।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভোট বর্জকারী প্রার্থীরা বলেন, নির্বাচনে আমাদের কোন একজনকে বিজয়ী দেখানো হলেও আমরা এ প্রহসনের নির্বাচন মানবো না। আমরা এই প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবো।
এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই নগণ্য। ওসমানীনগরের প্রতিটি ইউনিয়নের কেন্দ্রগুলো ছিল ফাঁকা। কোন কোন কেন্দ্রে যৎ সামান্য ভোট কাস্ট হলেও বেশিরভাগ কেন্দ্র ছিল ভোটারশূণ্য। তবে এসব ভোটার শূণ্য কেন্দ্রে চলে জাল ভোটের মহোৎসব। ভোটার শূণ্য এসব কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছে সাংবাদিকরা ভোট কাস্টিং তথ্য জানতে চাইলে অনেক কেন্দ্রেই প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সাংবাদিকদের ভোট কাস্টিং তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন।