নগরজুড়ে ছুটির আমেজ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ৯:৩০:২৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : নজিরবিহীন ভোটবিমূখতার মধ্য দিয়ে রোববার অনুষ্ঠিত হলো বহুল আলোচিত সমালোচিত নিরুত্তাপ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। ভোটগ্রহণের দিন রোববার ছিল সরকারী ছুটি এবং বিএনপি-জামায়াতের হরতাল। সেদিন নগরীতে জনসাধারণের উপস্থিতি ছিল খুব কম। সর্বত্র বিরাজ করেছিল ছুটির আমেজ। ভোটের পরদিন সোমবার সরকারী ছুটি না থাকলেও নগরজুড়ে ছিল ছুটির আমেজ। ফাঁকা ছিলো ব্যস্ত নগরের সবকটি সড়ক।
দোকানপাঠ-মার্কেট, বিপনী বিতান খোলা থাকলেও ক্রেতা উপস্থিতি ছিল নগন্য। যানচলাচল স্বাভাবিক থাকলেও যাত্রী ছিল তুলনামূলক কম। ব্যাংক, অফিস-আদালতেও মানুষের উপস্থিতি ছিলো খুবই কম।
সোমবার সরেজমিনে নগরীর বন্দরবাজার, আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, পাঠানটুলা ও রিকাবীবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সর্বত্র ছুটির আমেজ। রাস্তাঘাটে খুব কম সংখ্যক ক্রেতা জনসাধারণ। জিন্দাবাজার ও বন্দরবাজার এলাকায় বিপনী বিতান ও দোকানপাঠ খোলা থাকলেও ক্রেতা উপস্থিতি ছিল নগন্য। সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও যাত্রী সংখ্যা ছিল কম।
সোমবার বিকেলে কথা হয় সিএনজি অটোরিক্সা চালক শাহাবুদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, আমি নগরীর ওসমানী মেডিকেল-বন্দরবাজার রুটে অটোরিক্সা চালাই। যেখানে ১০/১৫ মিনিটে আসন পূর্ণ হতো সেই জায়গায় এক ট্রিপের আসন পূর্ণ হতে সময় লেগেছে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। নগরীর ঐ গুরুত্বপূর্ণ রুটে যাত্রী সব সময়েই বেশী থাকে। কিন্তু সেই জায়গায় যাত্রী খরায় হতাশ তিনি।
একই কথা জানিয়েছেন বন্দরবাজার-টুকেরবাজার রুটের সিএনজি অটোরিক্সা চালক আদনান আহমদ। তিনি বলেন, বন্দরবাজার এলাকা হচ্ছে নগরীর প্রাণকেন্দ্র। এখানে দিনরাত যাত্রীর ঠেলাঠেলি দেখা যায়। কিন্তু আজ সকাল থেকেই যাত্রী নেই। একটা ট্রিপ দিতেই দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় লাগছে। এভাবে চললে মালিক ইনকাম ও জ¦ালানীর টাকা তোলাই দায়। আমরা সব সময় দেখে আসছি নির্বাচনের পরদিন সারাদেশে উৎসবের আমেজ থাকে। কিন্তু বর্তমানে সম্পূর্ণ উল্টো।
নগরীর হাসান মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাস্টমারের দেখা পাইনি। গরীবের মার্কেট খ্যাত হাসান মার্কেটে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের পছন্দের মার্কেট। কিন্তু এখানেও ক্রেতাশুন্যতা বিরাজ করছে। দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি না ফেরা পর্যন্ত ব্যবসা বাণিজ্য ঠিকিয়ে রাখা দায় হয়ে পড়েছে।
জিন্দাবাজারে কথা হয় প্রাইভেট চাকুরীজীবি মিনহাজের সাথে। তিনি বলেন, ভোট উপলক্ষে রোববার ছুটি ছিল। আজ অফিস খোলা কিন্তু সকাল থেকেই অফিসে অলস সময় কাটাচ্ছি।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে সর্বত্র উত্তেজনা ও অজানা শঙ্কা বিরাজ করেছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সরব উপস্থিতিতে অনেকটা অনায়াসেই শেষ হয়েছে নির্বাচন। ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও ফের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় চলে গেছে এমন আলোচনা-সমালোচনা সর্বত্র। সরকারবিরোধী শিবিরে নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা থাকলেও গণসংযোগের মতো টা-া কর্মসূচীতে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল। হামলা-মামলার ভারে ন্যূজ নেতাকর্মীদের মনোবল ধরে রাখাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বিরোধী দলগুলো। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে এমন গুমোট ভাব ভাবিয়ে তুলছে জনসাধারণকে। আওয়ামী লীগ ফের ৫ বছরের জন্য মসনদে বসতে যাচ্ছে নাকি শীঘ্রই নতুন কোন নির্বাচন হবে এমন প্রশ্ন সরকার ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জনসাধারণের।