বকেয়া বেতনের দাবিতে তারাপুর চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ৮:৫৯:০৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি দিয়ে আন্দোলনে নেমেছে তারাপুর চা বাগানের শ্রমিকরা। দুই সপ্তাহ ধরে বেতন না পাওয়া, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত বকেয়ার তৃতীয় কিস্তি না পাওয়াসহ ৭ দফা দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনে তারাপুর চা বাগানে ফের অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।এদিকে বাগানের আয় কমে যাওয়াসহ আর্থিক সঙ্কটের কারণে সহসা শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের কোন সম্ভাবনা দেখছেনা বাগান কর্তৃপক্ষ। এরপরও শ্রমিকদের সাথে শীঘ্রই আলোচনায় বসছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার থেকে কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি শুরু করেছেন শ্রমিকরা। দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন না হলে মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতির পাশাপাশি অবস্থান, বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারাপুর চা বাগান শ্রমিক ও পঞ্চায়েত কমিটি।চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে শুকনো মৌসুমের কলম বন্ধ থাকায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। বেতন না পাওয়ায় শ্রমিকদের ঘরে ঘরে অভাব, হাহাকার দেখা দিয়েছে। স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করতে পারছেন না শ্রমিকরা।
তারাপুর চা বাগানের শ্রমিক মমতা রায় বলেন, চা বাগানই আমাদের জীবন। আমরা চা বাগান বন্ধ থাকুক এটা চাই না। ২ সপ্তাহ ধরে কোনো বেতন ভাতা পাচ্ছি না। ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে আন্দোলন শুরু করেছি।অপর শ্রমিক গীতা হালদার বলেন, জানুয়ারি মাসে কোনো বেতন ভাতা নাই। সন্তানদের স্কুলে ভর্তি যেমন করতে পারিনি, তেমনি নতুন ক্লাসের বইও কিনে দিতে পারছি না। আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনাটা চাই।
পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী জানান, কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে বার বার বেতন আটকে যাচ্ছে। এতে করে শ্রমিক পরিবারে নানান সংকট বাড়ছে। বেতন না পাওয়ার কারণে সংক্রান্তি উৎসব পানসে হয়ে গেছে। আমরা অচলাবস্থার অবসান চাই। বার বার বাগান বন্ধ থাকাটা আমরাও চাই না। বাধ্য হয়ে অভাবের তাড়নায় আন্দোলন করছি।পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চৈতন্য মোদী জানান, গত ২ সপ্তাহ ধরে বাগান শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছেন না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বকেয়া বেতনের তৃতীয় কিস্তিও আমরা পাচ্ছি না। অধিকার হারিয়ে, অধিকার পাওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে কঠোর আন্দোলন শুরু করব।
চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী জানান, তারাপুর চা বাগান কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন থেকে লোকসান গুণছে। বাগানের আয় কমে যাওয়ায় চা শ্রমিকদের মজুরীর পাশাপাশি বাগান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও কয়েক মাসের বেতন আটকে আছে। শীঘ্র্ই এ ব্যাপারে করণীয় ঠিক করতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।