চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ইতিহাস গড়ল জাপান
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ৯:২৪:২৭ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত বছর অগাস্টে চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করেছিল ভারতের চন্দ্রযান। এবার সে পথেরই অনুসারী হলো এশিয়ার আরেক দেশ জাপান। বিশ্বের পঞ্চম দেশ হিসেবে শুক্রবার চাঁদে সফল অবতরণ করে দেশটির চন্দ্রযান স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (স্লিম)। বিবিসি, আল জাজিরাসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার মধ্যরাতে জাপানের চন্দ্রযান স্লিম চাঁদের শিওলি কার্টার নামের একটি এলাকায় অবতরণ করেছে। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারত এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পেরেছে।মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জাক্সা) জানায়, শুক্রবার জাপানের স্থানীয় সময় রাত ১২টা ২০ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করেছে স্লিম। তবে নভোযানটির সোলার প্যানেলগুলো কাজ করছে না। এ কারণে ব্যাটারি থেকে ‘ব্যাকআপ’ শক্তি নিয়ে এগোতে হচ্ছে স্লিমকে।
চাঁদের এই অঞ্চলটি বর্তমানে সূর্যালোক পাচ্ছে, শিওলি কার্টারের অবস্থান সেখানে। চলতি মাসের শেষের দিকে অবশ্য এই অঞ্চলটি আড়ালে চলে যাবে।এক সংবাদ সম্মেলনে জাক্সার গবেষণা বিভাগের প্রধান হিতোশি কুনিনাকা বলেন, ‘এক মাস আগে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল স্লিম। সে সময় সূর্যের অবস্থান যেখানে ছিল- এখন আর সেখানে নেই। ফলে গত বেশ কয়েক দিন ধরেই সৌরশক্তি গ্রহণ করতে পারছে না স্লিমের সোলার প্যানেলগুলো।’
বর্তমানে স্লিমের ব্যাটারিতে যে পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত রয়েছে, তাতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা নভোযানটি সচল থাকবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন কুনিনাকা।চন্দ্রযানের ট্র্যাকিং ডাটা দেখে জাক্সাপ্রধান কুনিনাকা বলেন, যেখানে নামার কথা ছিল সেখানেই স্লিম নেমেছে সে ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত তিনি। তবে ঠিক কোন জায়গায় ল্যান্ডারটি রয়েছে এবং সেটি একেবারে ঠিকমত নামতে পেরেছে কিনা তা যাচাই করে দেখতে অন্তত দু’মাস সময় লাগবে বলে জানান কুনিনাকা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চাঁদের বুকের একটি গর্ত সংলগ্ন এলাকাকে মহাকাশযান নামানোর আদর্শ জায়গা বলে বেছে নিয়েছিল জাক্সা। এই গর্তটির নাম ‘শিওলি গহ্বর’। পৃথিবী থেকে চাঁদের সবচেয়ে কাছের এই অংশের (যে অংশ পৃথিবী থেকে দেখা যায়) ১০০ মিটারের (৩২৮ ফুট) মধ্যে হালকাভাবে স্লিমকে নামানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।যানটি নামার আগে দেখে নেওয়া হয়েছিল কোথাও কোনো বাধা রয়েছে কিনা। ৫০ মিটার দূর থেকে সেটি পরীক্ষা করে দেখা হয়। সেই মতো সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই পালকের মতো চাঁদের বুকে নেমে আসে চন্দ্রযান।
গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর স্লিম এর সফল উৎক্ষেপণ করেছিল জাপান। গত ২৫ ডিসেম্বর চাঁদের কক্ষপথে যানটি প্রবেশের কথা জানিয়েছিল জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। স্লিমের অবতরণের পর এবার চাঁদের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা চলবে। চাঁদের জন্ম, বিবর্তন নিয়ে তুলে আনা হবে অনেক নতুন তথ্য।
জাপানের ল্যান্ডার স্লিম (স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেশন মুন) থেকে যে রোভার নামবে চাঁদের বুকে, তা এক্স-রে ছবি তুলবে। কৃষ্ণগহ্বর, নিউট্রন স্টার এবং সুপারনোভার উচ্চ মানের এক্স-রে তুলে জাপানের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রে পাঠানো হলে সেগুলোর গঠন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাবেন বিজ্ঞানীরা।