সুনামগঞ্জে ফসলরক্ষা বাঁধের ৯০ ভাগ কাজ এখনও শুরু হয়নি
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ৫:১৪:২৩ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের সময়সীমা শেষ হয়ে আসলেও এখনও ৯০ ভাগ কাজ অবশিষ্ট রয়েছে। এছাড়া অসংখ্য অপ্রয়োজনীয় বাঁধে বরাদ্দ দেয়ায় হাওরে কৃষকরা অসন্তুষ্ট প্রকাশ করছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নে জগাইরগাঁও এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৮নং প্রকল্পের ‘ফসলরক্ষা বাঁধ’ ‘অপ্রয়োজনী’য় বলে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা মন্তব্য করেছেন। এই কাজ বাস্তবায়ন করছে গত বছরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) নির্ধারিত সদস্যরা। এই বাঁধ নির্মাণ কাজে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা। জগাইরগাঁও গ্রামের পাশে সুনামগঞ্জ-টুকেরবাজার যাতায়াতের পাকা সড়ক থেকে সুরমা নদীর পাড় পর্যন্ত এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বাঁধের পাশে থাকা ‘মিয়ার খাল’ নামের খাল থেকে মাটি উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ করেছেন পিআইসির সদস্যরা। এস্কেভেটরের মাধ্যমে বাঁধের গোড়া থেকে চওড়া করে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। এতে গ্রামের মানুষের ফসলি জমিতে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এতে কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে। এছাড়া খালের পাড়ে থাকা মরিচের চাষ, রসুন, বিভিন্ন প্রকারের সবজি, জালাচারা নষ্ট করে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে।
অপরদিকে, বাঁধ নির্মাণে খালেরপাড়ের বাসিন্দাদের গাছ, বাঁশঝাড় প্রভৃতি বৃক্ষ কর্তন করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীদের উদ্যোগে বাঁধের মাটি আটকাতে খালের তীরজুড়ে বাঁশের ব্যারিকেড দেয়া হলেও ঢালুতে মাটি ভরাট করে দেয়া হয়নি-এমন অভিযোগ গ্রামের একাধিক বাসিন্দার। জামালগঞ্জ উপজেলায় ৬টি হাওরে ৪২টি পিআইসির মাধ্যমে কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু ৭৫ দিনের মধ্যে ৩৮দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। নামমাত্র কয়েকটি বাঁধে মাটি ফেলা হয়েছে। হালি, শনি ও মহালিয়া হাওরের কাজ দেখে মনে হয় ৯০ ভাগ কাজ এখনও বাকি আছে। শান্তিগঞ্জ, দিরাই শাল্লায় একই অবস্থা। শান্তিগঞ্জের খাই হাওরে অপ্রয়োজনীয় বাঁধে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখনও মাটি পড়েনি। শাল্লায় অনেক পিআইসি জমির মালিক না হওয়ায় মাটি পাচ্ছেননা। বাঁধের পাশের জমির মালিকরা মাটি দিচ্ছেননা। কোথাও কোথাও কমিটির লোকজনের মধ্যে অমিল থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছেনা। তাহিরপুর উপজেলায় মহালিয়া হাওরের ৫৬, ৫৭, ৫৮ ও ৫৯ নং পিআইসিতে একটি বাঁধেও মাটি পড়েনি। এ অবস্থায় হাওরের বোরো ফসল নিয়ে শংকিত কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, নির্বাচনের কারণে বাঁধের কাজ সময়মত শুরু করা যায়নি। সব পিআইসি কমিটিকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। আশা করছি সময়মতো কাজ শেষ করতে পারব।