সুনামগঞ্জকে বাঁচাতে আগে হাওর রক্ষা করতে হবে : আলোচনা সভায় বক্তারা
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ৬:০০:৫৪ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে ছোট বড় ৯৫ টি হাওর আছে। হাওর রক্ষার জন্য ১৭০০ কি:মি: বেড়ীবাঁধ আছে। এছাড়া রয়েছে ৩০০ এর অধিক চলমান প্রকল্প। কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়না। ফলে আগাম বন্যায় ফসলডুবির সংখ্যা থাকে বেশি। হাওর সংরক্ষণ না হওয়ায় ধীরে ধীরে বিলীন হচ্ছে নানা প্রজাতির ধান। হাওরের মিঠা পানিতে সুস্বাদু মাছ এখন আগের মতো পাওয়া যায় না। সুনামগঞ্জকে বাঁচাতে সবার আগে হাওর রক্ষা করতে হবে।
সোমবার শহরের সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে হাওরের বাঁধ নদী কৃষি ও পরিবেশ সংকট নিরসনে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও এল আর ডি’র যৌথ আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা বলেন, হাওরে বন্যা দেখা দিলে ফসল ঘরে তুলা যায়না। ফলে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। ২০১৭ সালের বন্যার রিপোর্টে বিশ্ব ব্যাংক বড় সমস্যা হিসাবে সুনামগঞ্জের হাওরকে চিহ্নিত করেছেন। হাওরের বেড়ীবাঁধ নির্মাণে মাটি সংকট দেখা দিয়েছে। যেখান থেকে মাটি তুলা হচ্ছে সেখানে ধান, খড়, শুকানো যাচ্ছে না। মাটি সংকটে ব্যহত হচ্ছে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ। তারা আরও বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে রামসা যেদিন থেকে ঢুকেছে সেদিন থেকে মরে গেছে। গাছ, পাখি নিধন হচ্ছে নিয়মিত। হাওরের বৈচিত্র্য হিজল কেটে ফেলা হয়। পাখি ধরে বস্তায় ভরে সিলেট নেওয়া হয়। দখল দূষনে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ। হাওরের বাঁধের পাশে গাছ লাগানো হয়না, ফলে ঢেউয়ে ভেঙে যায় বাঁধ। হাওরের উপর আমাদের অধিকার রয়েছে। হাওর বাঁচাতে আমাদের অধিকার সম্পর্কে আরো সোচ্চার হতে হবে।
বক্তারা বলেন, দেশের মধ্যে ৭ টি জেলা হাওর বিস্তৃত। তন্মধ্যে সুনামগঞ্জে রয়েছে বেশি হাওর। হাওর বেষ্টিত এই অঞ্চলে হাওর মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি তুলেন। পর্যটকরা টাঙ্গুয়ার হাওরে এসে রাত্রী যাপন করেন। এতে করে বর্জ্য ত্যাগের ফলে মিঠাপানি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে মাছ মিলছেনা আগের মতো। বিলীন হয়ে যাচ্ছে নানা প্রজাতির মাছ।পিআইসি প্রকল্প নিয়ে বক্তারা বলেন, যেখানে বাঁধের প্রয়োজনীয়তা নেই সেখানেও বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে এবং অতিরিক্ত টাকা বরাদ্দ দিয়ে লুটের আয়োজন করা হচ্ছে। এখনো ৯০ ভাগ বাঁধে কাজ শুরু হয়নি। ফলে ২০১৭ সালের মত আগাম বন্যা হয়ে গেলে ভয়াবহ ফসলহানীর আশঙ্কা রয়েছে।
বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঞ্চালনায় ও এলআরডি’র নির্বাহি পরিচালক শামসুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ নজরুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাসেদ ইকবাল চৌধুরী, পুলিশ সুপার আবুসাঈদ, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম, সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আল মাহমুদ, বেলার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আখতার, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, কৃষি প্রশিক্ষক মোস্তফা আল আজাদ, হাওর বাঁচাও আন্দোলন এর জেলা সভাপতি বিজেন সেন রায়,পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি শমসের আলীসহ হাওরের প্রান্তিক কৃষক ও জেলা উপজেলার গণমাধ্যম কর্মী