৭ বছরেও শেষ হয়নি যাদুকাটা নদীতে সেতু নির্মাণ কাজ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ৬:৩৮:০২ অপরাহ্ন
তাহিরপুর প্রতিনিধি: যে সেতুকে কেন্দ্র করে তিন উপজেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার মাইলফলক সৃষ্টি হবার পাশাপাশি পর্যটন স্পষ্টগুলোতে স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে জীবন জীবিকার পরিবর্তন হত। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানসহ দায়িত্বশীলদের গাফিলতির কারণে ও বর্তমানে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় শাহ আরেফিন (রাঃ) ও অদ্বৈত মহাপ্রভু’ মৈত্রী নামে নির্মাণাধিন সেতুটি স্বপ্নপূরণের দ্বার প্রান্তে এসেও আলোর মুখ দেখছে না। বরং গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষসহ সর্বমহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সেতুটি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের গড়কাটি ও বিন্নাকুলী গ্রামের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত যাদুকাটা নদীতে নির্মাণ করা হচ্ছে।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, যাদুকাটা নদীর উপর ‘শাহ আরেফিন (রাঃ) ও অদ্বৈত মহাপ্রভু’ মৈত্রী নামে সেতু নির্মাণ করছে সরকার। ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৮৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। নির্মাণ কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে ৩০ মাসের মধ্যেই শেষ করার নির্দেশনা ছিল। ইতোমধ্যে নির্মাণ কাজ ৭৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। সেতুর ১৫টি পিলার ও ৭৫টি গার্ডারের মধ্যে ৫৩টি নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও ব্রিজের অন্যান্য কাজ চলমান রয়েছে বললেও বাস্তবে কাজ বন্ধ রয়েছে। সেতুর কাজ ৩০ মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও গত ৭ বছরের মধ্যেও তা হয়নি। ফলে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে পর্যটক, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষজনকে।
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন জানান, যাদুকাটা নদীর উপর সেতু নির্মাণ কাজ কচ্ছপ গতি এগিয়েছে এতদিন। এখন তো একবারেই বন্ধ রয়েছে নির্মাণ কাজ। ৩ বছরে শেষ করব বলেছিল এখন ৭বছর পার হচ্ছে শেষ হয়নি।মোটর সাইকেল চালক শফিক মিয়া জানান, নদী পার হতে এখন প্রায় ২০ মিনিট লাগে। বর্ষার সময় আরোও বেশি সময় লাগে, টাকাও খরচ হয় বেশী। অনেক সময় নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে।
উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুক মিয়া জানান, একটি সেতুর উপর নির্ভর করছে উপজেলার তিনটি স্থলবন্দর, পযর্টন স্পট, জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন। কিন্তু সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় এই সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা।
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে নদীর দুই পাড়ের মানুষসহ ২৫-৩০টি বাজারের ব্যবসায়ীগণ তাদের মালামাল পরিবহন করতে না পারায় মানুষ উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে পারছে না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব আলম জানান, নানান কারণেই সেতুটির কাজ সময় মত শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে ৭৬ভাগ কাজ শেষ হয়েছে, কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই কাজ শেষ করে উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, সেতুটি সম্পন্ন হলে জেলার সাথে মধ্যনগর, ধর্মপাশার যোগাযোগ সহজ হবে, একই সাথে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকা যাতায়াত সহজসহ এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিভিন্ন স্থানে সহজে পরিবহনসহ সার্ভিকভাবে পরিবর্তন হবে। নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলব।