অবশেষে মাশরাফিবিহীন সিলেটের জয়
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৯:২৮:০৮ অপরাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার : মাশরাফি অনির্ধারিত বিরতিতে। পুরনো জার্সিও আপাতত নির্বাসিত। নতুন অধিনায়ক, নতুন জার্সিতে তাই যেন কপাল খুলল সিলেটের। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) টানা পাঁচ ম্যাচ হারার পর অবশেষে প্রথম জয়ের দেখা পেল সিলেট স্ট্রাইকার্স। এমন জয়ে মেঘলা শীতল দিনে কুয়াশামাখা সিলেটের মাঠ কিছুটা সময়ের জন্য যেন উষ্ণ হয়ে উঠলো। মোহাম্মদ মিঠুনের নেতৃত্বে মাশরাফীকে ছাড়াই শুক্রবার দুরন্ত ঢাকাকে ১৫ রানে হারিয়েছে হারতে হারতে ধুকতে থাকা সিলেট।
জয়ের দিনে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিকে অভিনব উপায়েও উদযাপন করেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। জার্সির পেছনে খেলোয়াড়দের নাম ও নম্বর বাংলাতে লিখেছে। রঙয়েও এনেছে পরিবর্তন। গোলাপির বদলে সবুজ জার্সি। আর তাতেই ভাগ্য বদলালো সিলেটের।টস হেরে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান করে সিলেট। জবাবে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ঢাকা করে ১২৭ রান।
ঢাকার সামনে লক্ষ্যটা খুব বড় ছিল না। টানা তিন ম্যাচে হেরেছে তারাও। কিন্তু, কালও ফিরতে পারল না জয়ের ধারায়। ১৯ রানেই হারায় প্রথম দুই ওপেনারকে। রিচার্ড এনগারাভার বলে লেগ বিফোর হন সায়েম আইয়ুব। ৯ বলে ১৩ রান করেন তিনি। অপর ওপেনার নাঈম শেখকেও ফেরান এনগারাভা। দুই রান করে বোল্ড হন নাঈম।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ঢাকা। ক্রিজে থিতু হতে পারেননি কোনো ব্যাটারই। সাইফ হাসান ১৯ বলে ১৭ ও অ্যালেক্স রস ১৮ বলে ২০ রানের ইনিংস খেললেও বড় করতে পারেননি। ফলে কোনো জুটি গড়তে পারেনি প্রতিরোধ। শেষ দিকে ছয়টি চারে তাসকিন আহমেদ ১১ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ঢাকার ইনিংসের সর্বোচ্চ রানও আসে তার ব্যাট থেকে।সিলেটের পক্ষে ৩০ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন এনগারাভা। দুই উইকেট পান রেজাউর রহমান।
এর আগে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি সিলেটের। ইনিংসের পঞ্চম বলেই শরিফুল ইসলাম বোল্ড করেন শামসুর রহমানকে। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই শূন্য রানে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকেও ফেরান পেসার শরিফুল। ১২ বলে তিন রান করে বোল্ড হন শান্ত।দুর্দান্ত ছন্দে থাকা শরিফুল নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন জাকির হাসানকে। তাকেও প্রথম বলে বোল্ড করেন ঢাকার এই পেসার। ১৩ রানে তিন উইকেট হারানো সিলেটের হাল ধরেন অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ও সামিট প্যাটেল। দুজনের ৫৭ রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেয় সিলেট। প্যাটেল ৩২ বলে ৩২ রান করে আরাফাত সানির বলে গুলবাদিন নাইবের তালুবন্দি হন। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন রায়ান বার্ল। চার বলে এক রান করে উসমান কাদিরের বলে লেগ বিফোর হন।
এক প্রান্ত আগলে রেখে অর্ধশতক তুলে নেন মিঠুন। শেষ ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে সায়েম আইয়ুবের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। এর আগে ৪৬ বলে চারটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৫৯ রান করেন মিঠুন। শেষ দিকে আরিফুল হকের ৯ বলে তিন ছক্কায় ২১ রানের ইনিংস সিলেটকে এনে দেয় মোটামুটি একটা সংগ্রহ। ঢাকার পক্ষে চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন শরিফুল। ২৩ রান দিয়ে দুই উইকেট পান আরাফাত সানি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ২০ ওভারে ১৪২/৮( নাজমুল ৩, শামসুর ০, সামিত ৩২, জাকির ০, মিঠুন ৫৯, বার্ল ১, হাওয়েল ১১, আরিফুল ২১, রেজাউর ১*, নাঈম ৬*; শরীফুল ৪-০-২৪-৪, তাসকিন ৪-০-১৯-১, গুলবাদিন ৩-০-২৫-০, আরাফাত ৪-০-২৩-২, মোসাদ্দেক ১-০-১৪-০, উসমান ৪-০-৩৬-১)
দুর্দান্ত ঢাকা: ২০ ওভারে ১২৭/৯ ( সাইম ১৩, নাঈম ২, সাইফ ১৭, রস ২০, গুলবাদিন ১২, ইরফান ৪, মোসাদ্দেক ১১, আরাফাত ২, শরীফুল ৫ তাসকিন ২৭*, উসমান ৬*; আরিফুল ১-০-১৩-০, এনগারাভা ৪-০-৩০-৪, নাঈম ৪-০-১৯-১, সামিত ৩-৮-০, রেজাউর ৪-০-৪১-২ , হাওয়েল ৪-০-১৬-১)
ফল: সিলেট ১৫ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: রিচার্ড এনগারাভা।