সিলেটে হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৮:৪৪:০০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে আব্দুল মুতলিব হত্যা মামলায় দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদÐ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রমে কারাদÐ দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় প্রদান করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) মো. আহম্মদ আলী।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার খাড়াউড়া গ্রামের মৃত সুরুজ আলীর ছেলে মো. শওকত আলী। তিনি বর্তমানে মহানগরীর ইসলামপুর ধনুকান্দি চামেলীবাগ আবাসিক এলাকার ১০৫নং বাসার বাসিন্দা। অপর আসামী নগরীর টিলাগড় ব্রাক্ষনপাড়ার মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুর রহিম। তারা দু’জনই বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, মহানগরীর খাদিমনগর এলাকার ধনুকান্দি গ্রামের মৃত সাইয়িদ উল্ল্যাহর ছেলে আব্দুল মুতলিবের সাথে শওকত আলী ও আব্দুর রহিমের জমি-জমা কেনাবেচা টাকা নিয়ে বিরোধ চলছিলো। এনিয়ে ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে শওকত আলী ও আব্দুর রহিম নাস্তা খাওয়ার কথা বলে আব্দুল মুতলিবকে বাড়ি থেকে বাহিরে ডেকে নিয়ে যায়। ওইদিন শওকত আলী, আব্দুর রহিমসহ তাদের লোকজন আব্দুল মুতলিবকে হত্যা করে নগরীর আরামবাগ এলাকায় ফেলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরে বেওয়ারিশ হিসেবে নগরীর মানিকপীর (র.) টিলায় লাশটি দাফন করা হয়।
এদিকে আব্দুল মুতলিব বাড়ি ফিরতে না দেখে পরদিন ২৪ এপ্রিল কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন তার ভাই মো. তাহির আলী। পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে আব্দুল মুতলিবের লাশের ব্যবহারী কাপড়-চোপড় দেখালে তার ভাই ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা লাশ সনাক্ত করেন। পরবর্তীতে সিলেট জেলা প্রশাসনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল পুলিশ আব্দুল মুতলিবের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে লাশ সনাক্ত করেন তার পরিবার। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে আব্দুল মুতলিবের লাশ হযরত শাহপরান (র.) মাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আব্দুল মুতলিবের ভাই মো. তাহির আলী কোতোয়ালী থানায় শওকত আলী ও আব্দুর রহিমের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৪ জুলাই তৎকালীন কোতোয়ালী থানার এসআই আবু জাফর ২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। পরবর্তীতে ২০০১ সালের ১৭ জুলাই চার্জগঠন করে আদালত এ মামলার বিচারকাজ শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার আদালত আসামী মো. শওকত আলী ও আব্দুর রহিমকে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড এর ৩৬৪/৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে পেনাল কোড এর ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদÐসহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনরাশ্রমে কারাদÐ এবং পেনাল কোডের ৩৬৪ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদÐ ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ ফখরুল ইসলাম ও আসামীপক্ষে ষ্টেইট ডিফেন্স অ্যাডভোকেট মো. আমিরুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।