ওসমানীনগরে কবর জিয়ারত নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৭:০৫:১৮ অপরাহ্ন
ওসমানীনগর প্রতিনিধি: ওসমানীনগরে কবর জিয়ারত নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় ঘটনাস্থলে আনোয়ার হোসেন (৫০) নামের একজন নিহতসহ একই পরিবারের আরো অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। নিহত আনোয়ার উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের থানাগাঁও বেতখাই গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে।
আহতরা হলেন, আনোয়ারের মা জয়ধন বিবি (৬৫), ভাই জাকির হোসেন (৪০), নূরুল হোসেন (৪২), কবির হোসেন (৩৮), ভাতিজা পলক আহমদ মাহিদ (১৩), বোন হাসনা বেগম (২৮), নাসিমা বেগম (৩২), চাচী মমতা বেগম (৬০), হেনা বেগম (৫৫), চাচাতো বোন তামান্না বেগম (১৮), চাচা জিলু মিয়া (৫০), চাচাতো ভাই রাসেল আহমদ (২৫)। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৩/৪ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩জনকে আটক করেছে।
নিহতের পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার জুমআ’ সালাত শেষে পার্শ্ববর্তি একই বাড়ির শাহিন গংদের বাড়ির ভেতর দিয়ে জিলু মিয়া তার শিশুর কবর জিয়ারত করতে কবরস্থানে যান। এসময় শাহিন গং তার নতুন ঘরের মাঝ দিয়ে কবর জিয়ারত করতে যেতে বাঁধা প্রদান করেন। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। রাতে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। রোববার বিষয়টি নিস্পত্তি করার কথা ছিলো।
কিন্তু শনিবার সকাল ৮টায় ঘুমন্ত অবস্থায় প্রতিপক্ষ কাদির মিয়া, আব্দুল গণি, শাহিন, তোফায়েল, ফরিদ, বাদশা মিয়া দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় আনোয়ার হোসেন ও জিলু মিয়ার বসত ঘরে। এসময় আনোয়ার হোসেন, জিলু মিয়া, কবির হোসেন, নূরুল হোসেন হামলা প্রতিহত করতে গেলে প্রতিপক্ষের ধারালো ছুলফির ঘা লাগে আনোয়ার হোসেন এর পেটে। ছুলফির আঘাতে ঘটনাস্থলেই আনোয়ার হোসেন মারা যান। আহত হন জয়ধন বিবি (৬৫), জাকির হোসেন (৪০), নূরুল হোসেন (৪২), কবির হোসেন (৩৮), পলক আহমদ মাহিদ (১৩), হাসনা বেগম (২৮), নাসিমা বেগম (৩২), মমতা বেগম (৬০), হেনা বেগম (৫৫), তামান্না বেগম (১৮), জিলু মিয়া (৫০) ও রাসেল আহমদ (২৫)। আহতদের আর্ত চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে এসে নিহত ও আহতদের নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ালী উল্লাহ বদরুল, ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩জনকে আটক করেছে।
নিহতের ভাতিজা পলক আহমদ মাহিদ (১৩) বলেন, আমার চাচাকে জমিতে ফেলে শাহিনরা ছুলফি দিয়ে পেটে ঘা দিয়ে মেরেছে। আমরা ঘুমে থাকতেই তারা আমাদের ঘরে হামলা করে।নিহতের বাবা শফিক মিয়া (৭০) বলেন, আমার ছেলেকে তারা মেরে ফেলেছে। তারা আমার কেউ নয়। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ালী উল্লাহ বদরুল বলেন, তাদের দুই পরিবারের মধ্যে যুগ যুগ ধরে মারামারি চলে আসছে। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর অন্তত ৫বার শালিস করেছি। শুক্রবার তাদের মধ্যে হাতাহাতি হলে আমি তাদেরকে পুলিশের কাছে যেতে বলি। এর মধ্যে আজ দুর্ঘটনা ঘটে গেছে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ রামেদুল হক বলেন, দু’পক্ষের মারামারিতে ১জন নিহত হয়েছেন। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩জনকে আটক করেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ মামলার প্রস্তুতি চলছে।