ভারতে আন্দোলনে কৃষকরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৯:৩১:১২ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন কৃষকরা। পাঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে দিল্লি এসে বিক্ষোভ করতে চাইছেন তারা। ইতিমথ্যে হরিয়ানার সঙ্গে দিল্লির সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
কৃষকদের দাবি, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আইন করতে হবে। সেই আইন অনুসারে প্রতিবছর প্রধান ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করতে হবে সরকারকে। কৃষকদের ঋণ মাফ করতে হবে। কৃষকদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
এর আগে ২০২১ সালে কৃষকেরা পুলিশ ও প্রশাসনের যাবতীয় অবরোধ সরিয়ে দিয়ে দিল্লি সীমান্তে এসে প্রতিবাদ করেছিলেন। তাদের সেই প্রতিবাদ এক বছর স্থায়ী হয়েছিল। সেসময় কৃষকদের দাবি মেনে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় মোদি সরকার।
এবার দুইশটি কৃষক সংগঠন ‘দিল্লি চলো’ ডাক দিয়েছে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে তাদের সেই যাত্রা শুরু হওয়ার কথা মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি। কৃষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আজ সোমবার আলোচনায় বসছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই আলোচনা ভেস্তে গেলে দিল্লি অভিযান করার ব্যাপারে কৃষক সংগঠনগুলি বদ্ধপরিকর।
আর তাদের থামাবার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছে, হরিয়ানা ও কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লির সিঙ্ঘু, টিকরি ও গাজিয়াবাদ সীমানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেখানে রাস্তায় বড় বড় পাথর ও সিমেন্টের চাঙড় ফেলা হয়েছে। তার সামনে সিমেন্ট দিয়ে মোটা মোটা লোহার পেরেক বসানো হয়েছে। লাগানো হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া।
দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। যাবতীয় প্রতিবাদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দিল্লিতে কোনো ট্রাক্টর ঢুকতে দেয়া হবে না। ট্রাকে করে মানুষকেও ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে প্রশাসন জানিয়েছে। এমনকি বিয়ে ও শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানের জন্যও অনুমতি নিতে হবে। সেখানেও কোনো লাউড স্পিকার ব্যবহার করা যাবে না। উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা থেকে আসা গাড়িগুলি খুব ভালো করে তল্লাশি করে দেখা হবে।
দিল্লিতে প্রচুর লোহার ব্যারিকেডও বসানো হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান। কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কৃষকেরা যাতে কোনোভাবে দিল্লিতে ঢুকতে না পারে, তার জন্য পুলিশ একেবারে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে। এ ছাড়া হরিয়ানায় সব পেট্রোল পাম্পকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ট্রাক্টরে ১০ লিটারের বেশি ডিজেল দেয়া যাবে না। হরিয়ানায় দুইটি স্টেডিয়ামকে অস্থায়ী জেল হিসাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে কৃষকদের এখানে আটক করে রাখা হবে। পাঞ্জাব থেকে দিল্লি পর্যন্ত প্রচুর জায়গায় রাস্তা আটকে দেয়া হচ্ছে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মান বলেছেন, পাকিস্তানের সীমান্তেও এতটা কড়াকড়ি থাকে না, যতটা কৃষকদের আটকাতে করা হয়েছে।