ছয় মাসের খাবার নিয়ে দিল্লির পথে লাখো কৃষক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৮:৪৪:৩০ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কৃষক আন্দোলন ঠেকাতে দিল্লিতে এক মাসের ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। হরিয়ানাতেও একাধিক জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রাস্তায় বসানো হয়েছে সিমেন্টের ব্লক, পেরেক বসানো ব্যারিকেড ও কাঁটাতার। কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। এসব কিছু উপেক্ষা করেই দিল্লির পথে রয়েছেন হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশের প্রায় এক লাখ কৃষক। এমনকি ছয়মাসের খাদ্য সামগ্রী নিয়েই এবার মাঠে নেমেছেন তারা।
ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) গ্যারান্টি দেওয়ার আইন, কৃষকদের জন্য পেনশন, শস্যবিমা এবং তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ভারতের কৃষকরা। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দিল্লি চলো অভিযানের ডাক দিয়েছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা, কিষান মজদুর মোর্চাসহ ২০০টিরও বেশি কৃষক সংগঠন।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাস্তার মোড়ে মোড়ে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে, যাতে কৃষকেরা ট্রাক্টর, ট্রাক ও ট্রলি নিয়ে সড়কে নামতে না পারে। তারপরও পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছে কৃষকেরা।
দিল্লিতে মিছিলকারী কৃষকরা এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, তারা আরেকটি অবরোধের মতো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরের থেকে আগত হরভজন সিং নামে এক কৃষক বলেন, ‘সুই থেকে হাতুড়ি পর্যন্ত, পাথর ভাঙ্গার সরঞ্জামসহ আমাদের যা যা দরকার সবই আছে। আমরা আমাদের সাথে ছয় মাসের রেশন নিয়ে আমাদের গ্রাম ছেড়ে এসেছি। আমাদের কাছে যথেষ্ট ডিজেল আছে, এমনকি হরিয়ানার ভাইদের জন্যও।’
তিনি আরও বলেন, গতবার ১৩ মাসেও আমরা দমে যাইনি। আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে আমাদের দাবি পূরণ করা হবে, কিন্তু সরকার তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। এবার, আমাদের সব দাবি পূরণ হলেই আমরা চলে যাব।’
এদিকে আন্দোলনরত কৃষকরা দিল্লি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে পাঞ্জাব-হরিয়ানা শম্ভু সীমানায় পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে ব্যপক সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ড্রোনের মাধ্যমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে হরিয়ানা পুলিশ। তার পরও দমানো যায়নি কৃষকদের।
এনডিটিভি আরও বলছে, কৃষক আন্দোলন ঘিরে অশান্তি বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই দিল্লি ও হরিয়ানায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষকদের আটকাতে হরিয়ানার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিংঘু, গাজিপুর ও টিকরি সীমান্ত। দিল্লি-উত্তর প্রদেশের গাজিপুর সীমান্তে সিমেন্ট ঢালাই করে, পাঁচিল তুলে পাকাপাকিভাবে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কৃষক আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা ভারত। সেই আন্দোলনের জেরে শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। ‘বিতর্কিত’ কৃষি বিল প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তাই ফের একবার দেশ উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।