৪৩ বছর পর ফুলন দেবী মামলার রায় ঘোষণা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৮:২৪:৩৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: চার দশক পর ভারতের আদালতে আলোচিত ফুলন দেবীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার হত্যাকাণ্ডের ৪৩ বছর পর বুধবার শেষ দুই জীবিত অভিযুক্তের সাজা ঘোষণা করেছেন উত্তর প্রদেশের কানপুর জেলার একটি আদালত।ধর্ষণের বদলা নিতে ২০ জনকে হত্যা করেছিলেন ভারতের ‘দস্যুরানী’ খ্যাত ফুলন দেবী ও তার দলের সদস্যরা। সেই দলেরই দুজনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। তার মধ্যে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। আর প্রমাণের অভাবে অন্যজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক।
১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর প্রদেশের বেহমাই গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। ঠাকুর সম্প্রদায়ের উচ্চবর্ণের পুরুষদের হাতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ফুলন দেবী। তার বদলা নিতে ওই ঠাকুর সম্প্রদায়ের ২০ জন পুরুষকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিলেন ফুলন দেবী ও তার দলের সদস্যরা।
সেই ঘটনায় গোটা ভারতে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল। চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভিপি সিং। হত্যাকাণ্ডের পর ফুলন দেবীর নাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। তাকে ভারতে অত্যাচারিত, দলিত, নিম্নবর্ণের ও আদিবাসীদের প্রতিবাদী মুখ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাকে নিয়ে তৈরি হয় একাধিক চলচ্চিত্রও। ৩৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। তবে বিচার চলাকালীন অভিযুক্তদের ৩২ জনই মারা গেছেন। এই মামলা চলাকালীন ২৮ জন সাক্ষী মারা যান। ২০১২ সালে কানপুরের ওই আদালতে চার্জ গঠন হয়েছিল।
পরে একটি সাধারণ ক্ষমা প্রকল্পের অধীনে হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর মধ্যপ্রদেশে আত্মসমর্পণ করেছিলেন ফুলন। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন। সে বছর সমাজবাদী পার্টির তৎকালীন প্রধান ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়েম সিং যাদবের আদেশে ফুলন দেবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেন এবং ১৯৯৬ সালের লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেন। কোনো ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না হলেও তিনি উত্তর প্রদেশের মির্জাপুরের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নিজ প্রদেশ ও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন ফুলন দেবী। তাকে বলা হতো ব্যান্ডিট কুইন।