মূল্যস্ফীতি আবারও ঊর্ধ্বমুখী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৮:৪৯:৫৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : বছরের শুরুতে মূল্যস্ফীতি আবারও ঊর্ধ্বমুখী। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে উঠেছে। গত অক্টোবরের পর এটিই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি।অক্টোবরে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এরপর নভেম্বর ও ডিসেম্বরে পরপর দুই মাস মূল্যস্ফীতি কমেছিল। জানুয়ারিতে এসে আবার তা বেড়ে গেছে।বৃহস্পতিবার রাতে মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বিবিএস। তাতে দেখা যাচ্ছে, শহর ও গ্রাম-উভয় ক্ষেত্রেই মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
বিবিএসের তথ্য বলছে, গত জানুয়ারিতে গ্রামের চেয়ে শহরে মূল্যস্ফীতির চাপ ছিল বেশি। গ্রামে যেখানে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, শহরে তা ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। অর্থাৎ শহরাঞ্চলে এখন মূল্যস্ফীতি বেড়ে দুই অঙ্কের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
এমন একসময়ে মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধির এ তথ্য পাওয়া গেছে, যখন সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, সরকারি উদ্যোগের প্রভাবে শিগগিরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা করা যায়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গত ১৭ জানুয়ারি ঘোষিত মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুনের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতির অন্যতম লক্ষ্যই ছিল মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, নীতি সুদহারের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ঋণের সুদহার বৃদ্ধির পরও মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশে দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়।
বিবিএস মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ যে হিসাব দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি জানুয়ারিতে সামান্য কমেছে। কিন্তু তার বিপরীতে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেশ বেড়ে গেছে। জানুয়ারি খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশে, ডিসেম্বরে যা ছিল ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ। জানুয়ারিতে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪২ শতাংশে। গত ডিসেম্বরে এ খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, খাদ্যবহির্ভূত খাতে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা খাতে। এ খাতে ওষুধসহ মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাওয়া এর একটি বড় কারণ। এ ছাড়া পরিবহন ও পোশাক–পরিচ্ছদ কেনাকাটা বাবদও মানুষকে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে। ফলে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়েছে। আবার খাদ্য মূল্যস্ফীতি আগের মাসের তুলনায় সামান্য কমে যেখানে দাঁড়িয়েছে, সেটিকে গত বছরের উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তুলনা করলে অনেক বেশি।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বেশ লম্বা সময় ধরে দেখা যাচ্ছে। এটা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো বিষয়।