বাঁধের ধীরগতিতে দুশ্চিন্তায় কৃষক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৯:০৫:৪৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট: হাওর জনপদ সুনামগঞ্জে ফসলের সাথে বাঁধের বিষয়টিও সব সময় আলোচনায় থাকে। প্রতিবছরই এনিয়ে চলে নানান আলোচনা। কিন্তু তা নিয়ে এখনও দৃশ্যমান কোনো স্থায়ী সমাধান দেখা যায়নি। তাই বাঁধ নিয়ে কৃষকের কপলের কালো দাগ মুছে না কখনও।
দেখা গেছে হাওরে বোরো রোপণ প্রায় শেষ। কৃষক এখন নিরাপদে ফসল ঘরে তোলার ক্ষণ গুণছেন। কিন্তু ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের গতিপ্রকৃতি কৃষক সম্প্রদায়কে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তুলছে। এ নিয়ে চাপের মুখে আছেন মধ্যনগর উপজেলার চারটি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের ৩২টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সদস্যরা। তারা জানান, এখনো বাঁধের কাজের বরাদ্দের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পান নি। এদিকে কাজ শেষ করার আর মাত্র ১২ দিন বাকি রয়েছে। অর্থাভাবে বাঁধের এসব প্রকল্প কাজ চলছে ধীর গতিতে। এতে করে হাওরের বোরো ফসলরক্ষা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকেরা। নীতিমালা অনুযায়ী, ১৫ ডিসেম্বরে মধ্যে বাঁধের কাজ শুর” করে তা ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে।
মধ্যনগর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মধ্যনগর উপজেলার চারটি হাওর সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন। হাওরগুলো হচ্ছে— গুরমা, ঘোড়াডোবা, রুই বিল ও কাইলানী। গত ১৫ ডিসেম্বর এই উপজেলায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। চার কিস্তিতে বাঁধের প্রকল্প কাজের টাকা পিআইসিদেরকে পরিশোধ করার কথা রয়েছে। মধ্যনগরে চারটি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের ৩২টি প্রকল্প কাজের বিপরীতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৩ লাখ টাকা। পিআইসিদের প্রথম কিস্তির চেক দেওয়া হয়েছে গত ১১ জানুয়ারি। বাঁধের প্রকল্প কাজে দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ চাহিদা রয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ৭৪ লাখ টাকা। মধ্যনগরে ৩২টি প্রকল্পে গড়ে ৭০ ভাগ মাটির কাজ শেষ হয়েছে। রয়েছে দুরমুজ, স্লোভিং ও কার্পেটিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও সময় সাপেক্ষ কাজ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সকল কাজ সম্পন্ন করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন হাওরপাড়ের অনেক কৃষক। তাদের অভিযোগ, ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প কাজে কিস্তির টাকা কখনো সময় মতো দেওয়া হয় না। এতে করে সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় হাওরের ফসলডুবির ঘটনা ঘটে থাকে।
মধ্যনগর উপজেলার গুরমার হাওর উপ প্রকল্পে ২২নং পিআইসির সভাপতি রুপন চন্দ্র সরকার বলেন, আমাদের ২৫৩৫ মিটার কাজের জন্য ১৮ লাখ ১ হাজার ৭২ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। অনেক দূর থেকে আমাদেরকে মাটি এনে বাঁধের উপর ফেলতে হচ্ছে। কাজের বরাদ্দের প্রথম কিস্তির টাকা পেলেও ধারদেনা করে বাঁধে মাটি ফেলার কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছি। দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দের টাকা না পাওয়ায় কাজের গতি কমে এসেছে। দ্রুত দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
মধ্যনগরের ইউএনও অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, চাহিদার তুলনায় ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প কাজের দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ যে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা পর্যাপ্ত নয়। যা আমরা বরাদ্দ পেয়েছি, সেই টাকা শিগগিরই পিআইসিদের মধ্যে বিতরণ করবো।