গাজায় ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘের ১৫৮ কর্মী নিহত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৯:৫৩:৫২ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১৫৮ জন জাতিসংঘ কর্মীর মৃত্যু নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)। খবর আনাদোলুর।শুক্রবার এক প্রতিবেদনে ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইউএনআরডব্লিউএ-সহ জাতিসংঘের নিহত কর্মীর সংখ্যা ১৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে যে, দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে ইসরায়েলের বর্ধিত বিমান হামলা সেখানে মানবিক কার্যক্রমকে আরও ব্যাহত করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থান সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় কাজ পরিচালনা করা জাতিসংঘের বৃহত্তম সংস্থা। সংস্থাটি গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, লেবানন এবং সিরিয়ার ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রদান করে। গাজার অভ্যন্তরে সংস্থাটির প্রায় ১৩ হাজার কর্মী রয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।শনিবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ১০টি গণহত্যা চালিয়েছে ইসরায়েল, এতে অন্তত ৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১২৪ জন আহত হয়েছে। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে আনা হয়েছে এমন নিহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা ২৮ হাজার ৮৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে ১২ হাজার ৩০০ শিশু এবং ৮ হাজার ৪০০ জন নারীও রয়েছেন।
এছাড়া আহত হয়েছেন ৮ হাজারের বেশি শিশু এবং ৬ হাজারের বেশি নারীসহ কমপক্ষে ৬৮ হাজার ৬৬৭ ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার মানুষের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, অনেক ফিলিস্তিনি এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। ইসরায়েলের অবিরত বিমান ও স্থল হামলার কারণে অনেক যায়গায় অ্যাম্বুলেন্সগুলো পৌঁছাতে না পারায় এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে মরদেহ রয়েছে বলেও জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।প্রায় চার মাস ধরে ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে, যা গত ৭৫ বছরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
জাতিসংঘের মতে, গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা ইসরায়েলি আক্রমণে বাস্তুচ্যুত এবং তাদের সকলেই খাদ্য নিরাপত্তাহীন। অন্যদিকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ কমেছে প্রায় অর্ধেক। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।