গাজায় নিহত ২৯ হাজার ছুঁইছুঁই
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৮:৩২:৪২ অপরাহ্ন
সম্পূর্ণ বন্ধ নাসের হাসপাতাল
জালালাবাদ ডেস্ক : গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডব যেন থামছেই না। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় ২৯ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। ওয়াফা নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এবং রাফাহ প্রান্তে ইসরাইলি বাহিনী হামলায় এক রাতেই ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রের মতে, রোববার থেকে গাজার নাসের হাসপাতালের পরিষেবা ‘সম্পূর্ণ’ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ডব্লিউএইচও প্রধান বলেছেন যে, বন্ধ হওয়ার আগে প্রায় ২০০ রোগী গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম চিকিৎসা সুবিধার ভিতরে ছিলেন, যা প্রায় এক মাস ধরে ইসরাইলি অবরোধের মধ্যে রয়েছে।
এদিকে, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জাসিম আল থানি বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির দিকে অগ্রগতি শ্লথ হয়ে আসছে। ‘গত কয়েক দিনের প্যাটার্ন সত্যিই খুব আশাব্যঞ্জক নয়,’ তিনি শনিবার বলেছিলেন।
রোববার মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ১২৭ জন নিহত হওয়ায় এ সংখ্যা বেড়ে মোট ২৮ হাজার ৯৮৫ জনে দাঁড়ালো। এছাড়াও গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় মোট ৬৮ হাজার ৮৮৩ জন আহত হয়েছে। ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় ইসরাইলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,১৩৯। এর আগে জাতিসংঘ জানিয়েছে, রাফায় ইসরাইলি স্থল আগ্রাসনের ভয়ে ফিলিস্তিনিরা দেইর আল-বালাহ শরণার্থী শিবিরসহ মধ্য গাজার বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এদিকে রাফা শহরের পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। সেখানকার মানুষ প্রচ- ক্ষুধার্ত। তারা খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এদিকে ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠাতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (ওসিএইচএ) তাদের সর্বশেষ দৈনিক আপডেটে জানিয়েছে, রাফা শহরের লোকজন খাবারের জন্য এমন করুণ পরিস্থিতিতে রয়েছে যে, তারা খাবারের জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছে না। তারা ত্রাণবাহী ট্রাক দেখলে সেগুলো থামাচ্ছে যেন সঙ্গে সঙ্গেই সেখান থেকে খাবার নিয়ে খেতে পারে।
ওসিএইচএ বলছে, দক্ষিণ গাজার ওই জনবহুল শহরে মানবিক সংকট নিয়ে আতঙ্কিত অবস্থার মধ্যেই খাদ্য সংকটের কারণে লোকজন মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং তাদের মধ্যে তীব্র হতাশা তৈরি হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজায় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে জনাকীর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং সেখানকার লোকজনের জরুরি ভিত্তিতে খাবার প্রয়োজন। তারা ক্ষুধার্ত এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।ওসিএইচএ জানিয়েছে, গাজায় আরও ত্রাণবাহী ট্রাকে খাবার সরবরাহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সেখানকার লোকজনের পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যদিকে, গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের বেশ কয়েকজন কর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। অপরদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসের যুদ্ধবিরতি এবং বন্দীদের মুক্তির দাবিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, তিনি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে বলেছেন যে, জিম্মিদের মুক্ত করতে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা বিষয়টি তিনি গভীরভাবে অনুভব করছেন। সূত্র: আল-জাজিরা।