প্রেরণার অমর একুশে
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৩:৫৫:০৫ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ
জালালাবাদ রিপোর্ট : আজ অমর একুশে। আত্মত্যাগের অহংকারে জ্বলে ওঠার অনন্য এক দিন আজ। ভাষার অধিকারের পথ বেয়ে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেতনায় জেগে ওঠারও দিন আজ।
শুধু তাই নয়, গৌরবের পালকে আজ যুক্ত হলো আরেকটি নতুন অধ্যায়। আজ পূর্ণ হলো ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছর।১৯৫২ সালের এই ফেব্রুয়ারিতে অগ্নিঝরা ‘একুশের প্রতীক্ষায় ছিল গোটা জাতি। সারা দেশে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরদিন প্রতিবাদের রূপ কী হয় তা নিয়ে একটা তুমুল আলোড়ন চলছিল মানুষের মনে।ছাত্রদের আন্দোলনের প্রস্তুতির তীব্রতা ও অনমনীয় ভাব দেখে তৎকালীন সরকার জনমনে ভীতি সঞ্চারের চিরাচরিত পন্থাই গ্রহণ করেছিল। তবে এসব ভয়ভীতিতেও দমানো যায়নি ছাত্রদের।
১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে তরুণ ছাত্র যুবকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। তাদের সেই সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ পৃথিবীর ইতিহাসে অবিস্মরণীয় করেছে। বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও পালিত হয়ে আসছে সারা বিশ্বে।
১৯৫২ সালের এই দিনে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল মাতৃভাষা বাংলার অধিকার। আজ রক্তাক্ত সেই অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। বাঙালি জাতির ইতিহাসে গভীর শোক ও বেদনার দিন; একই সঙ্গে গৌরবেরও।বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হবে ভাষা আন্দোলনে শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরদের। শ্রদ্ধা জানানো হবে ভাষা আন্দোলনের উৎসপুরুষ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, সংগঠক প্রফেসর আবুল কাসেম থেকে শুরু করে ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ তোয়াহা, আব্দুল মতিন, গাজিউল হক, অলি আহাদ, গোলাম আজম, শামসুল আলম, গোলাম মওলা, আব্দুল গফুর, আনোয়ারুল হক খান, আলী আজমল, ইব্রাহিম তাহাসহ ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী জানা-অজানা সবাইকে।
আজ দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হবে। প্রতিটি শহীদ মিনার ভরে উঠবে ফুলে ফুলে। মানুষের ঢল নামবে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সব অলিগলি রাজপথ থেকে খালি পায়ে ফুল হাতে মানুষের মিছিল আজ ছুটবে শহীদ মিনারের দিকে। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে ভাষাশহীদদের স্মরণে লেখা গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি’।
দিবসটি পালন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: সহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণী দিয়েছেন।রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, আমাদের স্বাধিকার, মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অমর একুশের অবিনাশী চেতনাই জুগিয়েছে অফুরন্ত প্রেরণা ও অসীম সাহস। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মহান একুশের চেতনাকে ধারণ করে পৃথিবীর নানা ভাষাভাষী ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানবোধ জাগ্রত হোক, গড়ে উঠুক একটি বৈষম্যহীন বর্ণিল বিশ্ব। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এ কামনা করি।