প্রস্তুত হচ্ছে লালদিঘীরপাড় হকার মার্কেট
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৭:৩৬ অপরাহ্ন
রমজানের আগেই হকার পুনর্বাসনের ঘোষণা মেয়রের
স্টাফ রিপোর্টার : নগরীর ফুটপাতকে হকারমুক্ত করার লক্ষ্যে লালদিঘীরপাড় হকার মার্কেট মাঠের কাজ শুরু হয়েছে। ফুটপাতের হকার্সদের পুনবার্সনের জন্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুনরায় কাজ শুরু হয়। সিলেট সিটি কর্পোরেশন টেন্ডারের মাধ্যমে হকার্সদের পুনবার্সনের জন্য মাঠকে ব্যবসা উপযোগী করে তোলার জন্য পুরোদমে কাজ শুরু করলো সিসিক। রমজানের পূর্বেই মাঠে হকার পুনর্বাসন সম্পন্ন হবে বলে সিসিক সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
নগরীর ফুটপাত থেকে শুরু করে রাস্তার অর্ধেক জায়গা দখল করে ব্যবসা করে আসছেন ভ্রাম্যমাণ হকাররা। ফলে নগরীতে সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজট। হাঁটাচলায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয় পথচারীদের। এ নিয়ে দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। সম্প্রতি এ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে সিসিক। নগরীর লালদিঘীরপাড়স্থ হকার মার্কেট মাঠকে ফের ব্যবসার উপযোগী করে সেখানে হকারদের পুনর্বাসনে নেয়া হয়ে উদ্যোগ। ইতোমধ্যে সিসিকের সমন্বয়ে ২ হাজার হকারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
বর্তমান সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ক্লিন সির্টি, গ্রীন সিটি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও যানজট মুক্ত নগরী গড়তে ফুটপাত থেকে হকার্সদের সরিয়ে লালদিঘীরপাড়ে পুনবার্সন করে দেয়ার উদ্যোগের অংশ হিসেবে মাঠের সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শন করতে যান।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন সরঞ্জামাদি নিয়ে সির্টি কর্পোরেশনের লেবারগণ লালদিঘীরপাড় হকার্স মার্কেট মাঠে কাজ করছেন।
এ বিষয়ে হকার্স ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মোঃ রকিব আলী জানান, বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন হকার্স মার্কেট মাঠকে ব্যবসা উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এরই প্রেক্ষিতে মেয়র টেন্ডারের মাধ্যমে মাঠে ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত গতিতে কাজ করার দায়িত্ব প্রদান করেছেন। মেয়র আমাদের আশ্বস্ত করেছেন আমরা কেউ নিরাশ হব না। আমাদের চাহিদা মত ব্যবস্থা করে দিবেন এবং আগামী পনের দিনের ভিতরে এখানে হকারদের নিয়ে আসা হবে। আর রমজানের আগে ফুটপাত থেকে সকল হকারদের লালদিঘীরপাড়ে নিয়ে আসা হবে।
উল্লেখ্য যে, ২০২১ সালে হকার পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ঐ বছরের জানুয়ারিতে নগরভবন-লাগোয়া লালদিঘীর পাড়ের খোলা মাঠে হকারদের জন্য অস্থায়ী ভাবে পুনবার্সনের ব্যবস্থা করেনন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বেশি দিন সেখানে থাকে নি। তার কারণ ছিল তাদের লাইটিং সমস্যা, রাস্তার সমস্যা ছিল প্রধান করাণ। প্রাথমিক অবস্থায় ২০২১ সালে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১ হাজার ৭০ জন হকারকে পুনর্বাসন করা হয়। তবে দুই বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভেস্তে যায় হকার পুনর্বাসনের এ উদ্যোগ। সিসিক নির্মিত অস্থায়ী মার্কেটে হাতেগুণা কয়েকটি দোকান ছাড়া আর বসেন না কেউ । উল্টো নগরের ফুটপাত ছাপিয়ে সড়কেরও বহুলাংশও দখল করে নেন তারা। ফলে দিনভর নগরে লেগে থাকে যানজট।
লালদিঘীর মাঠে এবার দুই হাজার হকারের পুনবার্সনের ব্যবস্থা করা হবে। এই দুই হাজার হকারের মধ্যে রয়েছে কাপড়, সবজি, মাছ, মাংসসহ বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান। বর্তমানে যদি সুন্দর পরিবেশ এবং ক্রেতা আশার উপযোগী করে দেয়া হয় তাহলে হকাররা এখানে ব্যবসা করবেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় হকারদের জন্য নির্ধারিত স্থান লালদিঘীরপারস্থ অস্থায়ী মার্কেট নিমার্ণ কাজ পরিদর্শন কালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আসন্ন রমজানের পূর্বেই নগরীর ভ্রাম্যমাণ হকারদের অস্থায়ী মার্কেটে পুনবার্সন করা হবে। এর আগে একাধিকবার হকারদের পুনর্বাসনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হলেও কার্যত কোন কাজে এসেনি। আমি নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে এ সমস্যার সমাধানের জন্য প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। তারই প্রেক্ষিতে হকারদের নিধার্রিত স্থানে পুনবার্সন করে নগরবাসীকে যানজট ও ফুটপাতমুক্ত শহর উপহার দিব।
তিনি আরও বলেন, দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ১০টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ বণ্ঠন করে দেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান হবে এবং সিলেটবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে। একটি সুন্দর শহর নির্মাণ করতে সবার আগে নগরবাসীর সহযোগিতার প্রয়োজন। তাদেরকে নিয়েই আমি একটি ‘গ্রিণ, ক্লিন, স্মার্ট সিলেট’ নির্মাণ করবো।
এসময় সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, সিসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্করসহ বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।