সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : রমজানে নিত্যপণ্যের সংকট হবে না
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৮:৫৭:১৫ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যারা পণ্য লুকিয়ে রেখে দাম বাড়ায় তাদের ‘গণধোলাই’ দেয়া উচিত। তবে রমজানে কোনো জিনিসের অভাব হবে না। সব রকমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। গত সপ্তাহে জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ওই সফরের বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানাতে তার রাষ্ট্রীয় বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সরকার বিরোধী আন্দোলনকারীদের সম্পৃক্তা আছে কি না। আপনাদের মনে হয়না এটার সঙ্গে যারা এখানে সরকার উৎখাতের আন্দোলন করে তাদেরও কিছু কারসাজি আছে?শেখ হাসিনা বলেন, এর আগে দেখা গেল পেঁয়াজের খুব অভাব। পরে দেখা গেল বস্তাকে বস্তা পেয়াজ ফেলে দিচ্ছে। এই লোকগুলোকে কী করা উচিত? গণধোলাই দেয়া উচিত। আমরা কিছু করলে তো বলবে সরকার করছে। তার থেকে পাবলিক যদি এটার প্রতিকার করে তাহলে সব থেকে ভালো হয়, কেউ কিছু বলতে পারবে না।
একসময় বাংলাদেশে অভাব হলে তো শোনা যেত পেটে ভাত নাই, এখন কি সে কথাটা বলে? কী বলে, ডিমের দাম, পেঁয়াজের দাম, মুরগি, গরুর মাংসের দাম অথবা পাঙ্গাস মাছের পেটি খেতে পারছে না, যোগ করেন তিনি। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার আগের সময়ের সঙ্গে তুলনা টানেন শেখ হাসিনা। ১৫ বছর আগের ভাতের জন্য হাহাকার ছিল। একটু নুন ভাত, ভাতের ফ্যান চাইতো।
রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গ :
প্রতিবছর মুসলিমদের কাছে অন্যতম পবিত্র মাস রমজান এলেই বাজার পরিস্থিতি আলোচনায় আসে। এই সময়ের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দামের সঙ্গে পাল্লা দিতে হিমশিম খেতে হয় নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের।আসছে রমজানে বাজার ব্যবস্থাপনায় কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার? এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, রমজানে কোনো জিনিসের অভাব হবে না। সব রকমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ছোলা, খেজুর, চিনি ইত্যাদি পর্যাপ্ত পরিমাণে আনা হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কৃষকরা বাজারের দাম দেখে তারপর ছাড়ে। দাম না পেলে বাজারে ছাড়ে না। দাম নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া অনেকটা শাখের করাতের মতো কাজ করে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বাজারমূল্য বেশি কমালে কৃষক দাম পাবে না, আবার বাড়ালে সীমিত আয়ের মানুষ কিনতে পারবে না।
নির্বাচন প্রসঙ্গ :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতা আলোচনায় ছিল।অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দিতেন এসব দেশের ঢাকায় নিযুক্ত প্রতিনিধিরা। বিপরীতে, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।ভোটার উপস্থিতি নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের পর এটিই শেখ হাসিনার প্রথম বিদেশ সফর।সাম্প্রতিক এই সফরে ১২ জন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে দেখা হয়েছে তার। সেখানে তারা কেউ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোন প্রশ্ন বা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কি না?
এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি। কোনো উদ্বেগও ছিলো না, প্রশ্নও ছিলো না। সব আলোচনা হয়েছে দ্বি-পাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। তিনি বলেন, ইউরোপের সাথে তার রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকায় নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন করেননি। তারা জানতো ইলেকশনে আমি জিতে আসবো” বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি । যারা(আমাকে) চায় নাই, তারাই নির্বাচন নিয়ে কথা ওঠায়।
দেশে রাজনৈতিক দলের অভাব :
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলের অভাব আছে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। তার দাবি, দেশটির গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে, কেবল আওয়ামী লীগই জনগণের কথা বলে। প্রতিপক্ষদের মধ্যে কেউ যুদ্ধাপরাধীদের দল, কেউ সামরিক শাসকদের দল।”ক্ষমতার উচ্চ আসনে যে দল তৈরি হয় তাদের শেকড়ের সাথে যোগ থাকে না। তারা চায় এমন পরিবেশ হোক যাতে কেউ তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে।” মন্তব্য করেন তিনি।
টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি ঘিরে বিতর্ক চলছে বাংলাদেশ ও ভারতে। কয়েকদিন আগে এটি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার পর বাংলাদেশে অনেকেই প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে দেশটির কর্তৃপক্ষও টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজস্ব পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত করে।