১৭ বছরের সাজা নিয়ে ফেরারি ছাত্রদল নেতা সুমন, খুঁজছে পুলিশ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১০:৩১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী এক ছাত্রদল নেতাকে হন্য হয়ে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোমধ্যে একাধিকবার বাসা-বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই ছাত্রদল নেতার বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালালোও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
তার নাম রুবেল আমিন সুমন। তিনি বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের সিরাজপুর গ্রামের আব্দুল বারী (আনু মিয়ার) ছেলে এবং সিলেট মহানগর ছাত্রদলের ২২নং ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রুবেল আমিন সুমনের বিরুদ্ধে বালাগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা ও কোতোয়ালি থানাসহ সিলেটের অন্যান্য থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। গ্রেফতার করতে তার বাসা-বাড়িসহ সম্ভাব্য স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তল্লাশীর নামের পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ছাত্রদল নেতার পরিবারের সদস্যরা আতংকে রয়েছেন।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৭ নভেম্বর বালাগঞ্জের দেওয়ান আব্দুর রহিম হাইস্কুল এন্ড কলেজের খেলার মাঠ থেকে রুবেল আমিন সুমনকে গ্রেফতার করে র্যাব-৯ এর একটি টিম। পরে নগরীর উপশহর ডি বøকস্থ তার বাসায় তল্লাশী চালায়। এ ঘটনায় র্যাব-৯ এর তৎকালিন ডিএডি মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাদি হয়ে এসএমপির কোতোয়ালি থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন। যাহার নং-২৫ (৮.১১.২০০৮)। পরে ওই মামলায় ছাত্রদল নেতা সুমনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।
এ দিকে দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। বিচারক অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০১০ সালের ৩১ মে অভিযোগ গঠন করেন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২ মার্চ এই মামলায় তিনজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন শেষে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের তৎকালিন বিচারক বেগম মমিনুন নেসা রায় ঘোষনা দেন। এতে ছাত্রদল নেতা রুবেল আমিন সুমনকে ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত করেন।
এ ব্যাপারে ওই ছাত্রদল নেতার চাচা জামান আহমদ জানান, বিএনপির রাজনীতি করার কারণেই রুবেল আমিন সুমনকে এসব মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। প্রায়ই সুমনকে খোঁজতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন বাসা-বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায়। এনিয়ে তার মা ও স্ত্রী-সন্তান আতংকে থাকেন। এজন্য তারা ঘনঘন বাসা পাল্টাতে হয়। বর্তমানে সুমন কোথায় আছে আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, রুবেল আমিন সুমন জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে মহানগর ছাত্রদলের ২২নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকও ছিলো। এজন্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে সুমনকে একাধিক মিথ্যা মামলায় ফাসানো হয়েছে। বিএনপির রাজনীতি করার কারণে সুমনের মতো আরো অসংখ্য নেতাকর্মীকে এরকম মিথ্যা মামলায় জেলে যেতে হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, শুধু রুবেল আমিন সুমনকে পুলিশ খুঁজছি তা নয়, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুক্ত সকল আসামিকে ধরতে আমাদের অভিযান নিয়মিত চলছে।