চিনির বাজার ঘিরে শঙ্কা!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৯:২৬:৫৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : সামনে রমজান। ইফতারে শরবতসহ বিভিন্ন পদের খাবারে ঘরে ঘরে চিনির ব্যবহার বাড়ে। মানুষের বাড়তি চাহিদাকে পূঁজি করে রমজানের আগেই অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন চিনির বাজারে কারসাজিতে উঠে পড়ে লেগেছে। সরকার চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি শুল্ক কমিয়ে অর্ধেক করেছে গত বছরেই। এছাড়া বাজারে কারসাজি ঠেকাতে নানা অভিযান চললেও কাজ হচ্ছে না।
এদিকে বৃহস্পতিবার সরকারি লাল চিনির দাম বাড়ানোর ঘোষণা স্থগিত করলেও বাজারে কারসাজি শুরু হয়ে গেছে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে- কী হচ্ছে চিনির বাজারে! এ নিয়ে জনমনে বাড়ছে শঙ্কা!
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সরকার ঘোষণা দিয়ে চিনির দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু তারপরেও খুচরা ও পাইকারিবাজারে সাদা চিনির দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়ে সাদা চিনি হয়েছে ১৪৫-৫৫ টাকা। পাইকারি বাজারে বস্তাপতি বেড়েছে ১০০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত। আবার অল্প সংখ্যক খুচরা দোকানে আগের দাম ১৪০ টাকাতেই বিক্রি করলেও অনেক দোকানি বলছেন চিনি নেই। অন্যদিকে কম সংখ্যক খুচরা দোকানে লাল চিনি পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৬০ টাকায়।
শনিবার নগরীর বন্দরবাজার, আম্বরখানা, কালিঘাট বাজারে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বৃহস্পতিবার পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে চিনি কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানি থেকে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
দেশে চিনির বাজারে (সাদা চিনি) গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত বছরের ২ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাঁচা ও পরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক কমিয়ে অর্ধেক করেছিল। দেশের বাজারে চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও চিনির দাম না কমে বরং বেড়েছে। সরকার দফায় দফায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে চিনির দাম ঠিক করে দিলেও বাজারে দাম কার্যকর করতে পারেনি।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বৃহস্পতিবারের বাজারদরের প্রতিবেদন অনুসারে ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। সরকার ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে ঠিক করে দেওয়া দাম—খোলা চিনির ক্ষেত্রে ১৩০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনির বেলায় ১৩৫ টাকা কেজি।
স্থানীয় চিনিশিল্পের সুরক্ষায় বিদেশ থেকে আমদানি করা চিনিতে সরকার উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করে রেখেছে। এরপরও বিএসএফআইসির উৎপাদিত স্থানীয় লাল চিনির উৎপাদন মোট চাহিদার মাত্র ১ শতাংশ। দেশে চিনি আমদানি হয় বছরে ২০-২২ লাখ টন। আর লাল চিনি উৎপাদিত হয় মাত্র ৩০ হাজার টনের মতো। অর্থাৎ চিনির বাজার প্রায় পুরোপুরি আমদানির ওপর নির্ভরশীল।
এ জন্য সরকারি লাল চিনির পরিবর্তে আমদানি করা সাদা চিনির ওপরই ক্রেতাদের নির্ভর করতে হয়। বিদেশ থেকে অধিকাংশ চিনি অপরিশোধিত অবস্থায় আসে। দেশে আসার পর তা পরিশোধন করে বাজারে ছাড়া হয়।