হিফজুল কুরআনের ইজাযা ও সনদ যাচাই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মার্চ ২০২৪, ৭:২৬:০৭ অপরাহ্ন
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) কুরআনিক ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে সিলেটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হিফজুল কুরআনের ইজাযা ও সনদের যোগ্যতা যাছাই প্রতিযোগিতা। শনিবার অনাড়ম্বর আয়োজনের মধ্যে দিয়ে নগরীর জিন্দাবাজারস্থ একটি অভিজাত রেষ্টুরেন্টের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
মুয়জ বিন জাবাল (রা.) কুরআনিক ইনস্টিটিউটের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ এনামুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে হিফজুল কুরআনের ইজাযা ও সনদের যোগ্যতা নির্বাচনী প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলেমে দ্বীন তাহফিজুল কুরআন শিক্ষা বোর্ড সিলেটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা শায়খ আব্দুল সালাম মাদানি।
তরুণ আলেমে দ্বীন মাওলানা মাসুক আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি চিন্তাবিদ হাফিজ আব্দুল হাই হারুন, শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা পাঠানটুলা সিলেটের উপাধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার, কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদ সিলেটের ইমাম ও খতিব শায়খ সাইদ নুরুজ্জামান আল মাদানী, কুদরত উল্লাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসার সুপারেনটেনডেন্ট হাফিজ মাওলানা মিফতাহুদ্দীন আহমদ ও সিলেট আইডিয়াল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা এএইচএম সুলায়মান।বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর ছাত্র প্রতিনিধি শরীফ মাহমুদ, সিলেট জেলা পূর্বের ছাত্র প্রতিনিধি নাজমুল হাসান, সিলেট জেলা পশ্চিমের ছাত্র প্রতিনিধি রায়হান আহমদ প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে হিফজুল কুরআন মাদরাসার সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু যুগ চাহিদা ও আধুনিক মন মানসিকতার অধিকারী শিক্ষিত সমাজকে ঠিক সেভাবে আকর্ষণ করছে না। প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার কারণে মানুষ আজ অল্প সময়ে একই স্থানে বহুমুখী সেবা ও জ্ঞানার্জনের প্রত্যাশী। তাই হিফজুল কুরআন মাদরাসাগুলো আধুনিকরূপে ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে প্রকটভাবে। সময়ের এ বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) কুরআনিক ইনস্টিটিউট ২০০২ সাল থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে চালু করেছে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম। বিশ^মানের কুরআনে হাফেজ তৈরী করতে প্রতিষ্ঠানটি আয়োজন করছে হিফজুল কুরআনের ইজাযা ও সনদের যোগ্যতা নির্বাচনী প্রতিযোগিতার। এ থেকে তরুণ প্রজন্মের কুরআনে হাফেজগণ উপকৃত হবেন।
বক্তারা হিফজুল কুরআনে ইজাযা ও সনদের যোগ্যতা নির্বাচনী প্রতিযোগিতার সর্বাত্মক সফলতা কামনা করে বলেন, এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য- বাংলাদেশে ইজাযা ও সনদের প্রচলন। মসজিদে নববির উলামা ও কুররাদের সাথে বন্ধন তৈরির জন্য যোগ্য হাফিজ নির্বাচন। বাংলাদেশে বিশুদ্ধ ও যুগোপযোগী উপায়ে কুরআন শিক্ষা দানকারী হাফিজ নির্বাচন।
প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের শর্তাবলী:
প্রথম পর্ব : ১. ইজাযা ও সনদের নিয়মানুযায়ী আমার ছেলের হিফজুল কুরআনের আগ্রহ রয়েছে মর্মে ফরম পূরণ। ২. জন্ম নিবন্ধ সনদ অনুযায়ী প্রতিযোগীর বয়স অবশ্যই ৭-১৪ হতে হবে। ৩. তিন মিনিটের তিলাওয়াতের একটি ভিডিও ক্লিপ রেকর্ড করে মুয়াজ বিন জাবাল কুরআনিক ইনস্টিটিউটের ফেসবুক পেইজের কমেন্ট বক্সে অথবা ওয়েবসাইটে অথবা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে হবে। ৪. অঙ্গিকার : ইজাযা সনদের সমাপনী অনুষ্ঠানে মদিনা ভ্রমণের জন্য সম্মতি ও ইচ্ছা থাকতে হবে।
দ্বিতীয় পর্ব : এই পর্বে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপ হবে। প্রথম গ্রুপ : নাজারা, দ্বিতীয় গ্রুপ : ৫ পারা বা তার অধিক।
চূড়ান্ত পর্ব : উভয় গ্রুপের শিক্ষার্থীরা মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রতিযোগিতার প্রধান কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে অথবা জুমের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে হবে।
আয়োজকবৃন্দ বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের শহর মদিনা মুনাওয়ারার সাথে আমাদের সন্তানদের বন্ধন তৈরি হয়। সেই সাথে শাহজালাল আল আরবি সিলেটের সাথে হিজাজ ভূমি ও আহলে আরবের যে বন্ধন তৈরি করেছিলেন সেই স্বর্ণিল ও সমুন্নত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা সনদের পাশাপাশি পাবেন উভয় গ্রুপের প্রথম পুরষ্কার : উমরা পালনের টিকিট, দ্বিতীয় পুরষ্কার : ৩০ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরষ্কার : ২৫ হাজার টাকা, চতুর্থ পুরষ্কার : ২০ হাজার টাকা, পঞ্চম পুরষ্কার : ১৫ হাজার টাকা ও ষষ্ট পুরষ্কার (১০টি) : ১০ হাজার টাকা। বিজ্ঞপ্তি