সময় বাড়লেও সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধ নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ মার্চ ২০২৪, ১২:৩০:৫৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার ৪দিন পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি সুনামগঞ্জে হাওরের ফসলরক্ষায় বাঁধের কাজ। এখন পর্যন্ত হাওরের বাঁধ নির্মাণ কাজ ৯৪ ভাগ হয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো। তবে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের দাবী কাজ ৫০-৫৫ ভাগের বেশী হয়নি। এদিকে শতভাগ কাজ শেষ করতে দ্বিতীয় দফায় আরও ৭ দিন সময় বাড়ানো হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার।
তিনি জানান, গেল মাসে কয়েকদিন টানা বৃষ্টিপাত থাকায় বাঁধ নির্মাণের কাজ বন্ধ ছিল। যার ফলে নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে কাজ শেষ করার জন্য আরও ৭ দিন অর্থাৎ ৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।
তবে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের দাবী। ৭দিন কেন ১ মাসেও কাজ শেষ হবেনা। কারণ কাজের তেমন কোন অগ্রগতি নেই। পাউবো’র কর্তাব্যক্তিগণ ঘরে বসে রিপোর্ট দিচ্ছেন। আমাদের টীম প্রতিদিন হাওরে যাচ্ছে। কাজের লোক খুঁজে পাচ্ছেনা। এভাবে চলতে থাকলে এবার সুনামগঞ্জ বাসীর জন্য চরম দূর্গতি অপেক্ষা করছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, চলতি বছর সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলায় ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৩৩টি অংশে ৫৯১ কিলোমিটার বাঁধের কাজ ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়। সেই কাজ ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় আরও ৭ দিন সময় বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে নির্ধারিত সময়ে হাওরের বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সুনামগঞ্জের ১০ লাখ কৃষক। তারা বলছেন, কোনো বছরই পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ করতে পারে না। ফলে পাহাড়ি ঢলের পানিতে নষ্ট হয় সোনালী ধান। করচার হাওরের কৃষক সুনাই মিয়া বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে হাওরে বৈশাখী ধান লাগিয়েছি। কিন্তু সেই ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
শনির হাওরের কৃষক রবি মিয়া বলেন, প্রতি বছর ধান লাগিয়ে দুশ্চিন্তায় সময় পার করতে হয় হাওরের কৃষকদের। কোনো বছর নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ হয় না। দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, এবার কাজের অবস্থা মারাত্মক। এখন পর্যন্ত ৫০ থেকে ৫৫% কাজ হয়েছে। কাজের কোন অগ্রগতি নেই। ৭দিন কেন আরো ১ মাস সময়েও কাজ শেষ করা সম্ভব না। কিছু জায়গায় কাজ হয়েছে কিন্তু দুর্মুজ বাকী। লাগানো হয়নি ঘাস। এমন বাঁধ বন্যা দুরে থাক সামান্য বৃষ্টিতেই ধসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও বাঁধ মনিটরিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, বাঁধের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণে কেউ অনিয়ম করে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।