সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের বড় জয়, নির্বাচনে অংশ নিতে আর বাধা নেই
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ মার্চ ২০২৪, ৯:০১:১৬ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কোনো রাজ্য আর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারবে না। এমন রায় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়কে দেখা হচ্ছে ট্রাম্পের জন্য ঐতিহাসিক জয় হিসেবে। কারণ, এরমধ্য দিয়ে এ বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের অংশগ্রহণের পথে থাকা সবথেকে বড় বাধা দূর হয়ে গেলো।
বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দেয়। এতে বলা হয়, বিদ্রোহ দমনের সাংবিধানিক ধারার উল্লেখ করে একক কোনো রাজ্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে না। যদিও এই রায় দেয়া হয়েছে মূলত কলোরাডো রাজ্যের জন্য। তবে এই রায়ের কারণে অন্যান্য রাজ্যগুলোতেও ট্রাম্পের জন্য যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল সেগুলো বাতিল হয়ে গেল।
ট্রাম্পকে রিপাবলিকানদের প্রাইমারিতে অংশ নেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল কলোরাডো। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছিল যে, তিনি ২০২১ সালের ক্যাপিটল দাঙ্গা উস্কে দিয়েছিলেন। আদালত তার রায়ে বলেছে যে, নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ক্ষমতা শুধু কংগ্রেসের রয়েছে, কোনো রাজ্যের নয়। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের ফলে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কলোরাডোর প্রাইমারিতে ট্রাম্পের অংশগ্রহণের পথ সুগম হয়ে গেল।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেনকে হারাতে বেশ এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। সোমবার এই রুল জারির পর সাবেক প্রেসিডেন্ট তার সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথে নিজের বিজয় ঘোষণা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় জয়।
এরপর তিনি ফ্লোরিডায় তার বাসভবন মার-এ-লাগোতে এক বক্তৃতায় বলেন, এই সিদ্ধান্ত খুবই সুচিন্তিত এবং দেশকে একত্রিত করতে এটি ভূমিকা রাখবে যা এই মুহূর্তে দরকার। কলোরাডোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিনা গ্রিসওয়াল্ড বলেন, এই রুল জারির কারণে তিনি হতাশ হয়েছেন। তিনি বলেন, শপথ ভঙ্গ করে বিদ্রোহে উস্কানি দেয়াটাকে নির্বাচন থেকে বাতিল করার ক্ষমতা কলোরাডোর থাকা উচিত।
মেইনি ও ইলিনয়ও কলোরাডোর মতো ট্রাম্পকে একই অভিযোগে নির্বাচন থেকে বাতিল ঘোষণা করেছে। তবে কলোরাডোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করার কারণে ওই দুই রাজ্যের সিদ্ধান্ত এখন স্থগিত রয়েছে। আদালত তার রায়ে বলে, আমরা সম্মত হয়েছি যে- রাজ্যগুলো হয়তো কোনো ব্যক্তিকে রাজ্য সরকারে যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বা ফেডারেল সরকারে বিশেষ করে প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদ কার্যকর করার কোনো ক্ষমতা রাজ্যগুলোর নেই। নয় জন বিচারকের সবাই রুল জারি করে বলেন, শুধু কংগ্রেসই ফেডারেল কর্মকর্তা এবং প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর ধারা জারি করতে পারবে।
গৃহযুদ্ধকালীন সংশোধনীর মাধ্যমে আনা সেকশন থ্রি অনুযায়ী, ফেডারেল, রাজ্য এবং সামরিক বাহিনীর কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অংশগ্রহণের কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে সে আবার কোনো দপ্তরে পুনর্বহাল হতে পারবেন না। মামলায় বলা হয়েছে যে, ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে যে দাঙ্গা হয়েছিল তা উস্কে দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
আদালতের একজন বিচারপতি অ্যামি কনি ব্যারেট আলাদাভাবে লিখেছেন, নয়জন বিচারপতি মামলার বিষয়ে যে রায় দিয়েছেন, সেই বার্তাটিই মার্কিনিদের গ্রহণ করা উচিত। বিচারপতি ব্যারেট লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এই অস্থিতিশীল সময়ে আদালত রাজনৈতিকভাবে অভিযুক্ত একটি ইস্যু নিষ্পত্তি করেছে। এই পরিস্থিতিতে, আদালতের এই সিদ্ধান্তে জাতীয় উদ্বেগ না বেড়ে কমা উচিত।