হাকালুকির ‘বেলায়েত কুড়ি’ জলমহাল অপকৌশলে ইজারা প্রদানের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মার্চ ২০২৪, ৮:৪৯:৫২ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি : হাকালুকি হাওরের ‘বেলায়েত কুড়ি পটইবান্দ’ জলমহালটি অপকৌশলে ইজারা প্রদানের পাঁয়তারা চলছে। ইজারায় অংশগ্রহণকারি ‘সূর্যোদয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি’র সভাপতি হাবিবুর রহমানের অভিযোগে উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি সার্ভেয়ার প্রদত্ত দূরবর্তী-নিকটবর্তী প্রতিবেদন স্থগিত করে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে পুনঃতদন্তের দায়িত্ব প্রদান করে। কিন্তু উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার ওই পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন আমলে নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, হাকালুকি হাওরের ‘বেলায়েত কুড়ি পটইবান্দ’ জলমহাল ইজারা নিতে অন্যান্য সমিতির সাথে বড়লেখার তালিমপুর ইউনিয়নের ‘সূর্যোদয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি’ ও ‘ভাই ভাই মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি’ টেন্ডার জমা দেয়। সূর্যোদয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেন, জলমহাল থেকে সমিতি কার্যালয়ের দূরত্ব ইজারা প্রাপ্তির বড় যোগ্যতা। আমার সমিতি কার্যালয় জলমহাল হতে অনেক কাছে। ভাই ভাই মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির কার্যালয় বেশ দূরে। কিন্তু উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও স্থানীয় তহশিলদার আর্থিক লেনদেনে ‘সূর্যোদয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে বিল পাইয়ে দিতে দূরবর্তী-নিকটবর্তীর ভুয়া প্রতিবেদন জমা দেন। বিষয়টি জানার পর গত ৬ মার্চ তিনি ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিত উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সার্ভেয়ারের প্রতিবেদন স্থগিত করে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে পুনঃতদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান সরেজমিনে বেলায়েত কুড়ি পটইবান্দ জলমহাল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, নিকটবর্তী-দূরবর্তী সংক্রান্ত সার্ভেয়ারের প্রতিবেদন সঠিক নয়। তিনি মৌখিকভাবে বিষয়টি জলমহাল কমিটির সভাপতিকে অবহিত করেছেন। লিখিত প্রতিবেদন চাইলে দিবেন।
পদ্মা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ অভিযোগ করেন একই কায়দা সার্ভেয়ার ও তহশিলদার তাদের পছন্দের সমিতিকে হাকালুকির ‘চৌলা বদ্ধ’ জলমহাল পাইয়ে দিতে ভুয়া দূরবর্তী-নিকটবর্তী প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ জানান, তার প্রস্তাবেই বেলায়েত কুড়ি বিলের সার্ভেয়ার-তহশিলদারের প্রতিবেদন স্থগিত করে উপজেলা ফিসারি অফিসারকে পুনঃতদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন শুনা যাচ্ছে, ফিসারি অফিসারে পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন নেওয়াই হচ্ছে না। আগের যোগসাজসের সেই ভুয়া প্রতিবেদন আমলে নিয়েই জলমহালটি ইজারা প্রদানের পাঁয়তারা চলছে। শুধু এই বিল নয় আরো অনেক বিল ইজারায় নানা জাল জালিয়াতি, অনিয়ম চলছে। এসব নিয়ে তিনি বেশ বিব্রত।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজরাতুন নাঈম জানান, হাকালুকি হাওরের ২০ একরের উর্ধের জলমহালগুলো জেলা কমিটি থেকে ইজারা দেওয়া হয়। জেলা জলমহাল ও ব্যবস্থাপনা কমিটি কিছু বিষয় তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা প্রদান করে। তার আলোকেই উপজেলা জলমহাল কমিটি রেজুলেশন করেছে। পরবর্তী পদক্ষেপ জেলা কমিটি থেকেই নেওয়া হবে।