অগ্নিঝরা মার্চ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মার্চ ২০২৪, ৫:৩৮:২০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: আজ ১৪ মার্চ। ১৯৭১ সালের এদিন স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কার্যক্রম আরো জোরদার হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্দোলন পরিচালনার নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করেন। তিনি ৩৫টি নতুন নির্দেশ জারি করেন। নিজ বাসভবনে ন্যাপ নেতা আবদুল ওয়ালী খানের সাথে বৈঠক করেন বঙ্গবন্ধু। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যতদিন অধিকার আদায় হবেনা, ততদিন বাঙালির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। জাতীয় লীগ নেতা আতাউর রহমান খান আবারো বঙ্গবন্ধুর প্রতি অস্থায়ী সরকার গঠনের আহ্বান জানান। এদিন দেশের প্রয়োজনে অস্ত্রধারণ করার ঘোষণা দেন ঝিনাইদহের কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা।
জাতীয় পরিষদ অধিবেশনে যোগদানের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৪-দফা পূর্বশর্ত মেনে নেয়ার দাবিতে রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র-শ্রমিক-পেশাজীবী সংগঠন এবং যুব মহিলা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সভা-সমাবেশ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। সকালে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ন্যাপ নেতা খান আবদুল ওয়ালী খান আলোচনা বৈঠকে মিলিত হন। বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে রুদ্ধদ্বার কক্ষে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী এই আলোচনাকালে জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি দলের উপনেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ.এইচ.এম কামরুজ্জামানসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, স্বাধীন দেশে স্বাধীন নাগরিক হিসেবে জীবন-যাপনের জন্যই আমাদের সংগ্রাম।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাতে এক বিবৃতিতে অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে নতুন নির্দেশ ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু তার দীর্ঘ বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে নির্মূল করা যাবে না। আমরা অজেয়, কারণ আমরা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত। বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে সংবাদপত্র প্রেস কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে সকালে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে সমাবেশ শেষে মিছিলসহ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে তাঁর হাতে একটি আবেদনপত্র দেয়া হয়। তাতে নেতারা যে কোন নির্দেশ পালনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে অবিলম্বে একটি জাতীয় সরকার গঠন ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ঘোষণার জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনুরোধ জানান।