শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে আইএলওতে প্রশ্নের মুখে বাংলাদেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মার্চ ২০২৪, ৭:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) চলতি অধিবেশনে শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রশ্নের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। শ্রম অধিকার চর্চা, শ্রমিকদের ওপর হামলা-নির্যাতন বন্ধসহ শ্রম আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার হয়নি বলে মন্তব্য করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে ভারত, চীন, সৌদি আরব, ইরানসহ বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আইএলওর চলতি ৩৫০তম অধিবেশনে বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতির অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। আলোচনার শুরুতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইএলওর পথনকশা অনুযায়ী বাংলাদেশ কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা উপস্থাপন করেন।
পরে বিভিন্ন দেশ, জোট, সংগঠন ও আইএলওর পরিচালনা পরিষদের সদস্যসহ ২৪ জন বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।অধিবেশনে আলোচনা শুরু করেন পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রিচার্ড এ আদেজোলা। তিনি তার বক্তব্যে ২০২১ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে আইএলওর কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়ে জোরালো অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
এরপর আবারও বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি লিখিত প্রতিবেদনের ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা তুলে ধরেন। জাতীয় নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে কেন শ্রম আইন সংশোধন করা গেল না, তাও ব্যাখ্যা করেন। সংসদের আগামী অধিবেশনে শ্রম আইন সংশোধনের আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি জানান, শ্রমিকনেতা শহীদুল ইসলাম হত্যার অভিযোগপত্র তৈরি করা হয়েছে। বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে।
পরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আর্জেন্টিনা বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তোলে। তারা বেশ কয়েকজন শ্রমিকনেতার নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আনা ভিত্তিহীন অভিযোগগুলো প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
আইএলওর পরিচালনা পরিষদের অন্যতম সদস্য জার্মানির রেনাটে ড্রাউস বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতির উন্নতির তাগিদ দেন। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত নেওয়া উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি। অন্যদিকে ভারত, চীন, সৌদি আরব, ইরানের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তারা আইএলওর ২৬ ধারা অনুযায়ী ৮১, ৮৭ ও ৯৮ সনদ অনুসরণ না করায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব করেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বাংলাদেশ আইএলওর সনদ মেনে চলছে না বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। অধিবেশন থেকে আইএলওর পথনকশা অনুযায়ী বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হলো, তা নিয়ে আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সংস্থার ৩৫২তম অধিবেশনের আগে প্রতিবেদন দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।