১৭ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ মার্চ ২০২৪, ৮:৫১:২০ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : নানা পদক্ষেপের পরও দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মানুষের আয় যতটা না বাড়ছে তার চেয়ে অনেক বেশি হারে বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়। দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে খাবারের তালিকা কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। যার ফল হিসেবে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।
বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশের ৪৩ শতাংশ পরিবারকে ঋণ করে খাবার কিনতে হয়েছে। আর মোট জনসংখ্যার ১৭ শতাংশ ছিল খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়। এর আগে গত বছর ডিসেম্বরে ঋণ করে খাবার কিনতে হয় ৪০ শতাংশ পরিবারকে। এ মাসে মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ ছিল খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়। তার আগের মাস নভেম্বরে ঋণ করে খাবার কিনতে হয় ৪২ শতাংশ পরিবারকে আর মোট জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ ছিল খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়।
জাতিসংঘের এ প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দীর্ঘমেয়াদে হচ্ছে। এ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের পুষ্টিবিদরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদে চললে ভবিষ্যতে নেতিবাচক ফল পেতে হবে। বিশেষ করে, শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে, ফলে অতিমাত্রায় খর্বকায় শিশু দেখা যাবে। দেশে কর্মহীনতা বাড়বে। দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে জনমিতিক লভ্যাংশেও। দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কারণে মানুষের কার্যক্ষমতা কমে যাচ্ছে। আর কর্মক্ষম মানুষ কমে গেলে দেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের জানুয়ারি মাসের খাদ্য নিরাপত্তা জরিপ প্রকাশ করেছে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি। তাতে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি বলেছে, মৌসুমকেন্দ্রিক আয়ের সুযোগ বিপর্যস্ত হচ্ছে, বহুমুখী বিপদ খাবারের টেবিলে খাবারের পরিমাণকে বাধাগ্রস্ত করেছে। বাংলাদেশের সব বিভাগে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা সমান নয়, কোনো কোনো বিভাগে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে বলেও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর গত দুই বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে। টানা ২৪ মাস মজুরির চেয়ে দেশের মূল্যস্ফীতি বেশি। মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি হলে অর্থনীতির শঙ্কা আরও বাড়ে।পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের (পিইবি) জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ হাসনাত আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ কর্মচ্যুতও হচ্ছে। সব মিলিয়ে সঞ্চয় কমে গেছে, জীবনযাপনের ব্যয় বেড়ে গেছে।