সালাম মুর্শেদীর বাড়ি সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মার্চ ২০২৪, ৯:২১:২৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: রাজধানীর গুলশানে খুলনা-৪ আসনের এমপি ও সাবেক ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বাড়ি সরকারের গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে ৯০ দিনের মধ্যে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।
রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অনীক আর হক। রায়ের পর তিনি বলেন, সালাম মুর্শেদী গুলশানের যে বাড়িটিতে বসবাস করছেন সেটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি। এটি নিয়ে দীর্ঘ শুনানির পর আজ রায় হয়েছে। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, এটা পরিত্যক্ত সম্পত্তি। তা সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে। তাই এটি হস্তান্তর (সালাম মুর্শেদীর কাছে) সম্পূর্ণ অবৈধ। এছাড়া আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে রায় পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এটি বুঝে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর খুলনা-৪ আসনের এমপি ও সাবেক ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে গুলশানের বাড়িটি দখলের অভিযোগ তুলে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।রিট আবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭ এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন।
রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও ২০২২ সালের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়।রিটের পর ২০২২ সালের ১ নভেম্বর আদালত রুল জারি করে আদেশ দেন। রুলে বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলে রাখার অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। আর বাড়ি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি আদেশ ও কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া এ মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা না চালাতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে দুদক আইনজীবী আদালতকে জানান, আদালতের নির্দেশের পর বাড়িটি নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে বাড়িটির বিষয়ে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষীর ভিত্তিতে দুদক সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে যাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করেছে। এখনো সে মামলাটি তদন্তনাধীন। পরে এ সংক্রান্ত রুলের ওপর গত ৩ মার্চ ও ১৮ মার্চ শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।