গোপনে সম্পন্ন হলো এমসি কলেজের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মার্চ ২০২৪, ৪:৫১:৩৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : অবশেষে গোপনে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী এমসি (মুরারিচাঁদ) কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের কলাভবনের ১০১নং কক্ষে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং প্রতিমন্ত্রী নিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও শুধুমাত্র বিজয়ী শিক্ষার্থীদের আগের দিন মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে অনুষ্ঠানের সময়সূচী জানানো হয়।
একটা অনুষ্ঠান নিয়ে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের এমন লুকোচুরিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অথচ এই অনুষ্ঠানে অতিথি করা নিয়ে কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছিলো একটি ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের বিরুদ্ধে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আর এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল ১৭ ফেব্রুয়ারি। সেই অনুষ্ঠান সুন্দর ও জাঁকজমকপূর্ণ করার জন্য গত ১ ফেব্রুয়ারি কলেজের সকল সংগঠনের সাথে মতবিনিময় করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আহবায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দ। পরে সেখানে ঐ অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে প্রধান অতিথি করার কথা থাকলেও তাঁর সময়সূচি না পাওয়ায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীকে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করার কথা জানান কলেজের অধ্যক্ষ। তখন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা দিলওয়ার হোসেন রাহী প্রস্তাব তুলেন অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রনজিত সরকারকে প্রধান অতিথি করার জন্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের অধ্যক্ষ জানান যে, সিলেটে একজনই মন্ত্রী হয়েছেন। এবছর উনাকে প্রধান অতিথি এবং অ্যাডভোকেট রনজিত সরকারকে বিশেষ অতিথি করার জন্য। তখন ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এক প্রকার নারাজ হয়ে সভা ত্যাগ করেন। এর রেশ ধরেই পরে ৮ ফেব্রুয়ারি কলেজের ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক সংকট ও পানি সংকটের দাবি তুলে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তখন বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথি করাকে নিয়েই অধ্যক্ষ অবরুদ্ধসহ ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিলো বলে ধারণা করা হয়। এদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ পুরস্কার বিতরণ পর্বে অতিথি নিয়ে নতুন করে ঝামেলায় জড়ায়নি।
বৃহস্পতিবার কলেজের অভ্যন্তরে বিজয়ী ২৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। এসময় শুধু কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও পুরষ্কার জয়ী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগেরদিন বুধবার রাতে কলেজের শারীরিক শিক্ষক উস্তার আলী পুরষ্কার জয়ী শিক্ষার্থীদের বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় কলাভবনের ১০১নং কক্ষে উপস্থিত থাকার জন্য খুদে বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দেন। পরে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় কোনোপ্রকার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
এ বিষয়ে কলেজ ছাত্রলীগ নেতা দিলওয়ার হোসেন রাহী জানান, ৩ বছর পর এমন অনুষ্ঠান তাই আমরা চেয়েছিলাম একটু বড় পরিসরে হোক। অতিথি কোন ফ্যাক্ট ছিলনা। এরপরও কলেজ কর্তৃপক্ষ কেন এত ছোট পরিসরে করেছেন সেটা উনারাই বলতে পারেন।