সিলেটে লজ্জার হার বাংলাদেশের
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ মার্চ ২০২৪, ৯:৩৭:০২ অপরাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : টেস্ট ক্রিকেটে চূড়ান্ত জয়টা হয় ধৈর্যের। যেখানে ছোটখাটো একটি ভুলও বদলে দিতে পারে অনেক কিছু। সিলেট টেস্টের মাহাত্ম্যটাও সেরকম। সফরকারী শ্রীলঙ্কা ধৈর্যের পরীক্ষায় উতরে গেলেও পুরোপুরি ব্যর্থ বাংলাদেশ। ব্যাটারদের হতশ্রী ব্যাটিংয়ের খেসারত দিতে হলো পুরো দলকে। প্রথম টেস্টে বিশাল ব্যবধানে হারল চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯.২ ওভারে ১৮২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৩২৮ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে সফরকারীরা। বাংলাদেশের হয়ে ১৪৮ বলে অপরাজিত ৮৭ রান করেন মুমিনুল হক।
৫১১ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে যে এভাবে ভেঙে পড়বে বাংলাদেশ, তা ছিল অপ্রত্যাশিত। তৃতীয় দিনে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলটা চতুর্থ দিনে যেটুকু লড়াই করেছে সেটাই স্বস্তির। এক মুমিনুল হক ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই পারেননি আস্থার প্রতিদান দিতে। একপ্রান্ত আগলে রেখে শেষ পর্যন্ত লড়েছেন মুমিনুল, তবে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ।
তৃতীয় দিনের অস্বস্তি নিয়েই চতুর্থ দিনের ব্যাটিং শুরু করেন দুই অপরাজিত ব্যাটার মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলাম। তবে, লঙ্কানদের বোলিং তোপে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তাইজুল। দিনের তৃতীয় ওভারেই কাসুন রাজিথার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১৫ বলে ৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
তাইজুলের বিদায়ের পর দারুণ এক জুটি গড়েন মমিনুল ও মিরাজ। বেশ সাবলীল ব্যাটিং করেন এই দুই ব্যাটারা। তবে, খেই হারিয়ে ফেলেন মিরাজ। দলীয় ১১৭ রানের মাথায় রাজিথার বলে স্লিপে থাকা ধনঞ্জয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। তার বিদায়ে ভাঙে এই দুইজনের ৬৬ রানের জুটি। পরবর্তীতে শরিফুলকে নিয়ে ফের প্রতিরোধ গড়ে লাঞ্চ বিরতিতে যান মুমিনুল।
লাঞ্চের পর শরিফুলকে নিয়ে গড়েন ৮১ বলে ৪৭ রানের জুটি। তবে, সেই জুটি ভাঙে রাজিথার বলে শরিফুলের বিদায়ে। দলীয় ১৬৪ রানের মাথায় রাজিথার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ৪২ বলে ১২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর লেজের সারির ব্যাটারদের নিয়ে ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেন মুমিনুল।
এর আগে, ধনঞ্জয়া ও কামিন্দু মেন্ডিসের জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ৫১১ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দেয় লঙ্কানরা। মেন্ডিস ১৫৬ ও ধনঞ্জয়া ১০৮ রান করেন। এই দুই ব্যাটার সদ্য সমাপ্ত টেস্টের প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। তাদের দুইজনের সেই অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ভর করেই প্রথম ইনিংসে ২৮০ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে, মাত্র ১৮৮ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ৯২ রানের লিড পায় সফরকারীরা।
ওদিকে, সিলেটের ব্যর্থতা ভুলে চট্টগ্রাম টেস্টে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর। করুণ পরাজয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হারের কারণ জানিয়ে শান্ত বলেন, মাঝে মাঝে এমনটা (বড় পরাজয়) হওয়া স্বাভাবিক। তবে, কামিন্দু ও ধনঞ্জয়া যেভাবে ব্যাটিং করেছে সত্যিই অসাধারণ। পেসাররা যেভাবে শুরু করেছিল, তাদের নিয়ে আমি গর্বিত। উইকেট ভালো ছিল, শুরুতে কিছুটা মুভমেন্টও ছিল।
সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট আগামী ৩০ মার্চ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৮৮। শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৪১৮।
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫১১, আগের দিন ৪৭/৫) ৪৯.২ ওভারে ১৮২ (মুমিনুল ৮৭*, তাইজুল ৬, মিরাজ ৩৩, শরিফুল ১২, খালেদ ০, রানা ০; ভিশ্ব ১৫-৫-৩৬-৩, রাজিথা ১৪-১-৫৬-৫, কুমারা ১১.২-১-৩৯-২, জায়াসুরিয়া ৯-১-৩৭-০)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৩২৮ রানে জয়ী। সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজে শ্রীলঙ্কা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।