ভারতে নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে আতঙ্কে মুসলিমরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মার্চ ২০২৪, ৯:১০:২৬ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভারতের সাধারণ নির্বাচন। এবার নির্বাচনে জিতলে তৃতীয়বারের মতো ভারতের মসনদে বসবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এই নির্বাচন নিয়ে ভয় কাজ করছে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর মনে।
ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ১৯ কোটির কাছাকাছি। মুসলিমরাই ভারতের বৃহত্তম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্য। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সময়ে ভারতে সাম্প্রদায়িক সমস্যা বেড়েছে। কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি সরকারের আচরণ সাম্প্রদায়িক বলেই মনে করেন মুসলিম নাগরিকরা। সম্প্রতি বিবিসির নেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে এসব বক্তব্যই উঠে এসেছে।
গত কিছুদিন আগে দিল্লীর রাস্তায় নামাজ পড়তে থাকা মুসল্লিদের পুলিশের লাঠি দিয়ে পিটানোর ও লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল হয়। এছাড়া জানুয়ারিতে গোয়ায় এক মুসলিম যুবককে মারধর করে এক দেবীর নামে জয়ধ্বনি দিতে বলে কিছু কট্টর হিন্দুত্ববাদী লোকজন।
গত বছর আগস্টে এক হিন্দু রেল পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনজন মুসলিম। এদেরই একজন আসগর আলী। আসগর আলির মেয়ে বিবিসিকে বলেন, যদি ওই পুলিশ হিন্দু না হতো, তাহলে এতক্ষণে তার শাস্তি হয়ে যেত। একজন হিন্দু একজন মুসলিমকে মেরেছেন, এজন্য এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই।
এই ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপসে দেখা যায়, ওই পুলিশ আসগরের রক্তাক্ত দেহের ওপরে দাঁড়িয়ে আছেন। এসময় তিনি বলেন, তোদের প্রভুরা তো পাকিস্তানে, সেখানে চলে যা। ভারতে থাকতে হলে নরেন্দ্র মোদির কথামতো থাকবি। ভোটটা তাকেই দিবি। ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তবে এর পরেই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় মুসলিমদের ওপর নির্যাতন বেড়েছে।
মুসলিমদের ব্যবসা, বাড়িঘর ও মসজিদ ভাঙছে হিন্দুত্ববাদী কট্টর গোষ্ঠীগুলো। সম্প্রতি নয়াদিল্লীতে একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা গুড়িয়ে দেয় সরকার। ইতিহাসবিদরা জানান, মসজিদটির বয়স প্রায় ৬০০ বছর। তবে সরকার জানায় এগুলো অবৈধ স্থাপনা হিসেবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি সরকারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা এ ব্যাপারে সঠিক কোন জবাব দেননি। বরং বিজেপির একজন মুসলিম মুখপাত্র সৈয়দ জাফর বলেন, এটি বিরোধী দলের কাজ। তারা এটিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। বিজেপির সময়ে মুসলিমরা শান্তিতে আছে। এসব বিরোধী দলের অপপ্রচার। তাকে প্রমাণ দেখানো হলেও তিনি বলেন, দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে সবকিছু বিচার করা সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, বিজেপিতে এখন পর্যন্ত কোন মুসলিম সাংসদ নেই। বিজেপি নিজেকে অসাম্প্রদায়িক দাবি করলেও এমন নজিরই সত্যি বলে দেয় বলে মন্তব্য করে বিবিসি। অসাম্প্রদায়িক ভারতের নাম নিশানা দ্রুতই মুছে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে মুসলিমদের ওপর আরো নির্যাতন নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমরা।