আল-বিদা মাহে রমজান
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ৩:৩৪:১৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: দেখতে দেখতে আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিচ্ছে মহিমান্বিত মাস রমজান। আমরা এখন অবস্থান করছি রমজানের শেষ দশকে। রাসূল সা. এ দশককে খুবই গুরুত্ব দিতেন। ইবাদাতের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতেন। হজরত আয়েশা রা. বলেছেন, রমজানের শেষ দশকে রাসূল সা. এতো কষ্ট স্বীকার করতেন, যা অন্য সময় করতেন না।
রমজান হচ্ছে ঈমানদারদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগের মাস। যে মাসে মুসলমানরা আল্লাহর পক্ষ থেকে আলাদাভাবে সীমাহীন রহমত আর মাগফিরাত পেয়ে থাকে। আর তাই আমাদের উচিত সে সুযোগকে কাজে লাগানো। বেশি করে আল্লাহর ইবাদাত বন্দেগী করা। কুরআনের চর্চা করা। যেহেতু আমরা রমজানের একেবারে শেষের দিকে এখন অবস্থান করছি তাই আমাদের উচিত বেশি করে আল্লাহ দরবারে দোয়া করা। নিজেদের গুনাহের জন্য মাফ চাওয়া। বেশি করে আল্লাহকে ডাকা। এই ডাকা একান্ত নিজেদের মতো করে। নিজের যা কিছু চাওয়ার তা উজাড় করে চাওয়া।
সূরা আরাফের ৫৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন, তোমাদের রবকে ডাকো বিনত হয়ে এবং চুপে চুপে। আর এই চুপে চুপে ডাকার সবচেয়ে সুন্দর সময় হলো শেষ রাত। বান্দা যদি আল্লাহর কাছে চায় তো আল্লাহ সবচেয়ে খুশি হন। নবী সা. তার উম্মতদের আল্লাহর কাছে বারবার চাইবার জন্য বলেছেন। এই চাওয়াটার নামই হলো দোয়া। আর দোয়া কি তা নবী সা. বলেছেন, ‘দোয়াটাই হচ্ছে ইবাদাত’ (রিয়াদুস সালেহিন ১৪৬৫)।
কাজেই রমজানের শেষ দশক যেহেতু বেশি করে ইবাদাত বন্দেগী করার দশক তো এই দশকে আমরা বেশি করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করতে পারি। নিজেদের চাওয়ার যা কিছু আল্লাহর কাছে চাইতে পারি। এতে দোয়াও হবে আর ইবাদাতও হবে। তবে তা হতে হবে কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী চুপেচুপে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে এলাকা জানান দিয়ে নয়। আর এটা সাধারণ যুক্তিও বলে যে মানুষের একান্ত চাওয়া পাওয়ার অনেক কিছু থাকে যা প্রকাশ্যে বলা যায় না। তবে চুপেচুপে বলা যায়। সেটা হতে পারে কোনোকিছু পাবার জন্য আকাক্সক্ষা অথবা কোনো ভুলের জন্য মাফ চাওয়া, যাই হোক। আল্লাহ তা শুনবেন। তিনি সব জানেন সব বুঝেন, তাই বান্দার তাঁর কাছে গোপন কিছু নেই। বান্দা চাইলে একেবারে আল্লাহ কাছাকাছি গিয়ে তা চাইতে পারে। রিয়াদুস সালেহিনে ১৪৯৮ নম্বরে মুসলিম শরীফ থেকে সুন্দর একটি হাদিস বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত নবী সা. বলেছেন, ‘বান্দা যখন সিজদায় থাকে তখন তার রবের সবচেয়ে কাছাকাছি হয়’।
আর সূরা আলাকের শেষ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন ‘আমার সামনে সিজদা দাও আর কাছাকাছি চলে এসো’। সুতরাং বান্দার কিসের ভয়, কিসের সংশয়। সে চাইলে একেবারে তার রবের কাছে গিয়ে তার মনের কথা বলতে পারে। তিনি সেই রব যার কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। যার কাছে বান্দা চাইতে চাইতে ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে কিন্তু তিনি দিতে দিতে তার অফুরন্ত ভান্ডারের কিছুই হবে না। তাই আসুন রমজানের এই শেষদিকে এসে আমরা অন্যান্য ইবাদাত এর সাথে বেশি করে আল্লাহ দরবারে দোয়া করি। দোয়ার মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাই।