ওসমানীর নার্সকে বদলির জন্য রাষ্ট্রপতি পরিচয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ফোন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০১:৩৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রপতি পরিচয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনকে সিলেট থেকে গাজীপুরে দু’জন নার্সকে বদলির আদেশ দিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার পাবনার সুজানগর থেকে নিজেকে রাষ্ট্রপতি পরিচয় দেওয়া মো. সিরাজ নামে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করে ডিবি।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির পরিচয় দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ফোনে দুটি এসএমএস করেন মো. সিরাজ। তার বাড়ি পাবনায়। এসএমএস দেখে সন্দেহ হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিষয়টি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে জানান।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের এডিসি সাইফুর রহমান আজাদ জানান, সিরাজকে গ্রেফতার করতে ডিবি তার বাড়িতে গেলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
তদন্ত সূত্র জানায়, নার্স বদলির আদেশ দেওয়া এসএমএস দুটি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে পাঠান। ডিবি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে, রাষ্ট্রপতির ফোন নম্বর অথবা রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে এই এসএমএস যায়নি।
বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নবীনা খাতুন ও পারভীন আক্তারকে বদলির জন্য রাষ্ট্রপতি পরিচয় দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দেয় প্রতারক সিরাজ। বিষয়টি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডিবি পুলিশকে জানান। ঘটনার তদন্তে নেমে ডিবি ভুয়া রাষ্ট্রপতিকে গ্রেফতার করেছে।
জানা গেছে, সাভার এলাকার বাসিন্দা দুই নার্স সিলেট মেডিকেল থেকে গাজীপুরের কোনো একটি মেডিকেলে বদলি হতে কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে সিরাজ তাদের বদলি করিয়ে দেওয়ার জন্য আড়াই লাখ টাকা চুক্তি করেন। এ ছাড়া তিনি সচিবালয় এলাকায় ঘোরাফেরার মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে প্রতারণা করতেন।
হারুন অর রশীদ বলেন, রাষ্ট্রপতির পরিচয় দেওয়া গ্রেফতার সিরাজ একাধিক এমপির ভুয়া ডিও লেটার দিয়েছেন। ডিও লেটার দিয়ে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বদলির জন্য তদবির করতেন। সিরাজ অষ্টম শ্রেণি পাস। তিনি বিয়ে করেছেন তিনটি। তার এক স্ত্রী নার্স ও অন্যজন শিক্ষক। আট মাস আগে তিনি আরেকটি বিয়ে করেন। রাষ্ট্রপতি ছাড়াও সিরাজ বিভিন্ন এমপি ও মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। মোবাইল সিম কেনার পর ট্রুকলারে সিরাজ নম্বর সেভ করতেন রাষ্ট্রপতির নামে। সিরাজ যে সিম দিয়ে তদবির করতেন বা এসএমএস দিতেন, কাজ শেষ হওয়ার পর সেটি ফেলে দিতেন। এরপর সিম হারানোর নাটক সাজিয়ে জিডি করতেন থানায়। সেটা দিয়ে আবার নতুন সিম কিনে একই প্রতারণা করতেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
সিরাজ রাষ্ট্রপতির নাম কেন ব্যবহার করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তিনি কেন রাষ্ট্রপতির নাম ব্যবহার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এমপি, মন্ত্রী এমনকি সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির নাম ব্যবহার করে যারা প্রতারণা করেছেন এমন সবাইকে ডিবি আইনের আওতায় এনেছে।