আল বিদা মাহে রমজান
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ৩:৫০:৩৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: এবারের রমজান আমাদের মাঝে একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। রমজানের শেষদিন মহান রব তাঁর অসংখ্য বান্দাদের মাফ করে দেবেন। সুন্দরভাবে রোজা পালনের জন্য পুরস্কার দান করবেন। রবের কাছে তাই আমাদের প্রত্যাশা তিনি তাঁর অসংখ্য নেককার বান্দাদের সাথে আমাদেরও মাফ করবেন। এজন্য আমাদের মহান রবের দরবারে দোয়া করতে হবে। রমজান মাস সে দোয়া করবার সুন্দর একটি পরিবেশ আমাদের সামনে নিয়ে আসে। আমাদের উচিত এই রমজানেই আমরা আল্লাহর দরবারে দোয়ার একটা অভ্যাস গড়ে তুলি এবং এর সাথে সাথে সারাবছর এর চর্চা জারি রাখি। কেননা নবী সা. বলেছেন, দোয়া নিজেই ইবাদাত। সুতরাং দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে চাইবার সাথে সাথে সওয়াবও অর্জন করা যায়।
সূরা মুমীনের ৬০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন, ‘আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবো’। সুতরাং আল্লাহকে ডাকলেই তিনি সারা দেবেন এটা তাঁর নিজের কথা। আমরা তাঁকে ডাকতে পারছি কিনা বা আমরা তাঁকে ডাকি কিনা সেটা আমাদের দেখবার বিষয়। হজরত ওমর রা. বলেছেন, দোয়া কবুল করা না করা সেটা আল্লাহর ব্যাপার, আমার দায়িত্ব হলো দোয়া করা। আল্লাহ কুরআনে অনেক সুন্দর সুন্দর দোয়া আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। নবী করীম সা. অনেক সুন্দর সুন্দর দোয়া নিজে করতেন আর তাঁর উম্মতদেরও শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। যে দোয়াগুলো এতো সাবলীল আর এতো সুন্দর তা বলে বুঝাতে হয় না। যে দোয়াগুলোর ভাষা এতো সুন্দর যে, কেউ যদি বুঝে এগুলো আমল করে থাকে তো তার মন জুড়িয়ে যাবে।
সূরা আলে ইমরানের ৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ আমাদের দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন, ‘হে আমাদের রব (একবার যখন) তুমি আমাদের (সঠিক) পথের দিশা দিয়েছো, (তখন তুমি আর) আমাদের মনকে বাঁকা করে দিয়ো না, একান্ত তোমার কাছ থেকে তুমি আমাদের দয়া করো, কেননা যাবতীয় দয়ার মালিক তো তুমিই’। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন, রাসূল সা. সবসময় এই দোয়াটি করতেন- ‘আল্লাহুম্মা মুসার্রিফাল ক্বুলুবি সার্রিফ কুলুবুনা আলা ত্বা’য়াতিক অর্থাৎ হে হৃদয়সমূহকে ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন আল্লাহ, আমাদের হৃদয়গুলোকে তোমার আনুগত্যের দিকে ঘুরিয়ে দাও’। কতো সুন্দর এই দোয়ার ভাষা।
রাসূল সাঃ আরো দোয়া করতেন, হজরত যিয়াদ ইবনে ইলাকাহ তাঁর চাচা কুতবা ইবনে মালিক থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন নবী সা. এই দোয়াটি করতেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আয়ুযুবিকা মুনকারাতিল আখলাকি, ওয়া আমালি, ওয়া আহওয়া অর্থাৎ হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই মন্দ আখলাক বা চরিত্র, মন্দ আমল এবং কু-প্রবৃত্তি থেকে।
মানুষের চরিত্র যদি সুন্দর হয়ে যায়, মানুষের আমল বা কাজকর্ম যদি মন্দ না হয়, মানুষ যদি মনের লালসা বা লোভ থেকে বেঁচে থাকতে পারে তার জীবন তো সুন্দর হবেই। আর প্রত্যেক মানুষ যদি এই ইচ্ছা মনের মধ্যে লালন করে, খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকবার চেষ্টা করে আর আল্লাহ কাছে সাহায্য চায় তবে সমাজের প্রত্যেক মানুষই ভালো মানুষ হয়ে যাবে।
যে সমাজে সবাই ভালো কাজ করতে চায়, খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকতে চায় সে সমাজ হয় সবচেয়ে আদর্শ সমাজ, সবচেয়ে সুন্দর সমাজ। দোয়ার মাধ্যমে মানুষ তার মনে সেই পরিবর্তন আনতে পারে, যা তাকে ভালো কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে।